ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লুট মামলার প্রধান আসামিকে ধরে ছেড়ে দিলেন ওসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
লুট মামলার প্রধান আসামিকে ধরে ছেড়ে দিলেন ওসি

লক্ষ্মীপুর: দোকান লুটপাটের মামলার প্রধান আসামিকে ধরে থানায় নিয়ে দেন-দরবার করে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমানের বিরুদ্ধে। তবে ওসি বলছেন- আসামি অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির হবে মর্মে তাকে একজনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

 

কিন্তু মামলার বাদীর দাবি, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসামি অসুস্থতার বিষয়টি ভিত্তিহীন।  

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকেলে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে দোকান লুটের মামলার প্রধান আসামি মো. শাহজাহান ও দ্বিতীয় আসামি মাইন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে রাতে বিভিন্ন দেন দরবারের পর এক নম্বর আসামি শাহজাহানকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এনিয়ে বাদী এবং স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মজিবুর রহমান তোরাবগঞ্জ বাজারে হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। আসামিদের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামি পক্ষ তার বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১৮ এপ্রিল পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে মজিবুর ১৪ দিন জেলে খেটে জামিনে বের হন। তিনি জেলে থাকা অবস্থায় ২৪ এপ্রিল গভীর রাতে আসামিরা তোরাবগঞ্জ বাজারের তার হার্ডওয়্যার দোকানে গ্রিল ভেঙে দোকানে ঢুকে নগদ টাকাসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন মালামাল লুটে নেয়। দোকানের ওপরে তাদের বাসভবন ছিল। সেখান থেকে মজিবুরের স্ত্রী রৌশনারা নিচে নেমে এলে আসামিরা দোকানের এক কোণে তাকে বেঁধে রাখে। তিনি এ সময় চিৎকার দিলে তাকে মারধর করাও হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।  

ওই নারীকে উদ্ধার করে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর মজিবুর রহমান জেল থেকে বের হয়ে গত ৪ জুন লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি কমলনগর থানাকে এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) করার নির্দেশ দেন।  

মামলার বাদী মজিবুর রহমান বলেন, দোকান লুটের ঘটনায় মামলার ১ ও ২ নম্বর আসামিকে গতকাল বৃহস্পতিবার তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে আমার সামনে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে মামলার প্রধান আসামি শাহজানকে বাজারের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। রাতে ওসি মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে বলে আমি জানতে পারি। এ ঘটনাটি আমি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।  

বাদী মজিবুর রহমানের আইনজীবী মো. সোলাইমান বলেন, দোকান লুটের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করে ছেড়ে দেওয়ার কোনো বিধান নেই। বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনব।  

এ ব্যাপারে শুক্রবার বিকেলে কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বাংলানিউজকে বলেন, আসামি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। আটকের পর তাকে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আদালতে উপস্থিত হবেন মর্মে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সত্য নয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।