ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাগুরায় গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও এসইউএস এনজিও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
মাগুরায় গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও এসইউএস এনজিও

মাগুরা: সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে।

সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামে সংস্থাটির দুই কর্মকর্তা এক হাজার গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সরেজমিনে মহম্মদপুর সদরের কানাইনগর এলাকায় ব্র্যাক অফিসের পেছনে একটি ভাড়া বাড়ির কার্যালয়ের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত নারীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।  

বাড়ির সামনে এনজিওর সাইনবোর্ডে টাঙানো রয়েছে। তাতে লেখা আছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত। সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস)। আত্মকর্মসংস্থান ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। স্থাপিত ১৯৯৫। শাখা মহম্মদপুর।  

ভুক্তভোগী নারী সদস্যদের বসুরধুলজুড়ি গ্রামের তাহমিনা, জান্নাতি, চরপাচুড়িয়া গ্রামের ফুলমতি ও অন্তরা বেগম বলেন, প্রায় দুই মাসের বেশি সময় আগে তাদের গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নারীদের নিয়ে সমিতি গঠন করেন এসইউএস এর কর্মকর্তারা।

সমিতির প্রতিটি নারী সদস্যকে দুই বছর মেয়াদে কম সুদ ও সহজ শর্তে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে বলে জানায়। ঋণের বিপরীতে সঞ্চয় হিসেবে দশ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।  

মঙ্গলবার সকালে ঋণের টাকা নেওয়ার জন্য তাদের সদরের কার্যালয়ে আসতে বলেন। কার্যালয়ে এসে তারা দেখতে পান অফিস তালাবদ্ধ। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার বন্ধ। বাড়ির মালিক স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক গাজী কামাল তাদের পরিচয় ও অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি। এনজিওর দুইজন কর্মকর্তা ছিলেন। একজনের নাম রানা, আরেকজনের নাম জানাতে পারেননি ভুক্তভোগীরা। রানা নামের ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পটুয়াখালী হ-১১-১৫০৬।  

চরপাচুড়িয়া গ্রামের ওবাদুল মোল্যা, জাহিদুল ইসলামসহ পাঁচজন অভিযোগ করে বলেন, তাদের স্ত্রী ছাগল বিক্রি করে ঋণের আশায় ১০ হাজার টাকা করে জমা দেন। সদরের ব্র্যাক অফিসের পেছনে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) প্রধান কার্যালয় গড়ে তোলেন। সেই কার্যালয় থেকে তাঁরা এলাকার মানুষদের অধিক লাভ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের বিনিয়োগ করাতে থাকেন। প্রায় এক হাজার গ্রাহক তাঁদের অর্থ ওই এনজিওতে জমা করেন। অনেকে অধিক সুদের আসায় টাকা জমা করেন। অনেকে ঋণের টাকার বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ জামানত জমা রাখেন। টাকা হারিয়ে দরিদ্র এসব গ্রাহক এখন পথে বসে গেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) কথিত চেয়ারম্যান রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাড়া নেওয়া বাড়ির মালিক গাজী কামাল জানান, কয়েকদিন আগে দুই জন তাঁর বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাইনবোর্ড টাঙায়। কাগজপত্র দেখিয়ে চুক্তি করার কথা বলে তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল জানান, সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামের কোনো এনজিওর নাম তাদের তালিকায় নেই। তাঁদের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। তারপরও তিনি খোঁজ-খবর নেবেন বলে জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।