ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী মাসু বেগমকে (২৫) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে পলাতক থাকা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী কামাল হোসেনকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের সদস্যরা।

 

তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কামাল রামগতি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে।  

সোমবার রাতে  র‍্যাব-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তিনি জানান, স্ত্রী মাসু বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় কামাল। পরে হত্যা মামলায় বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরের আদালতে যাবজ্জীবন সাজার রায় হয় তার। এরপর র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর অভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামাল হোসেনের অবস্থান নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর এলাকায় শনাক্ত করে। এরই ধারাবাহিকতায় একটি চৌকস অভিযানিক দল সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে।  

জানা গেছে, ২০১৩ সালের দিকে জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের মেয়ে মাসু বেগমকে বিয়ে করেন কামাল হোসেন। তাদের সংসারে দুই ছেলের জন্ম হয়। এরপর কামাল আরও দুটি বিয়ে করেন। এনিয়ে প্রথম স্ত্রী মাসুর সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়, এসব নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এর জেরে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন মাসুকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনো লাভ হয়নি।  

২০২০ সালের ১২ আগস্ট বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে মাসুর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে। পরে ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মাসুর মা বিবি ছায়েরা (৫৮) বাদী হয়ে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় কামাল হোসেনকে প্রধান করে শাশুড়ি আয়েশা বেগম, ননদ নাজমা বেগম, ফাতেমা বেগম, ভাসুর মো. বাবুল ও জামাল এবং জামালের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের নাম উল্লেখ করে আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।  

এ হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন রামগতি থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার। তিনি ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এতে কামাল হোসেন, নাজমা বেগম, আয়েশা বেগম ও মো. বাবুলকে অভিযুক্ত করেন এবং মো. জামাল ও ফাতেমা বেগমকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন।  

পরে গত ২১ জুন হত্যা মামলাটির রায় দেন জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম। তিনি আসামি কামাল হোসেনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি কামাল হোসেনের বোন নাজমা বেগম (৩৩), মা আয়েশা বেগম (৬৩), ও ভাই মো. বাবুলকে (৩৮) বেকসুর খালাসের রায় দেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।