পঞ্চগড়: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে ইটভাটার সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে জ্বালানি ও মাটির ব্যবহার ছাড়াই মেশিনে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক ইট।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল ভজনপুর সেন্টার নামক এলাকায় পরিবেশ বান্ধব এই ইট কারখানা গড়ে তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম।
পরিবেশবান্ধব ও জমির মূল্যবান মাটি নষ্ট না করে জার্মান প্রযুক্তিতে পাথর গুঁড়া ও সিমেন্ট দিয়ে অত্যাধুনিক ব্লক ইট তৈরি করছেন তিনি। এমনকি সেগুলো আগুনেও পোড়াতে হচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ছোট্ট একটি কারখানায় শ্রমিকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশে স্তূপ করা পাথর, সিমেন্ট, সিলেক্সন বালি। এগুলোর সঙ্গে ডাস্ট ও কেমিক্যাল ট্রলিতে এনে হপারে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। পরে মিক্সচার মেশিনে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে ভাইব্রো মাল্টি ক্যাভিটি মোল্ডিং মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে ইট। আর এভাবেই মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সারি সারিভাবে মেশিন থেকে বেরিয়ে আসছে পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ইট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি। অন্যান্য ইটের চেয়ে এই কংক্রিট ইট টেকসই ও শক্তিশালী। পরিবেশবান্ধব হওয়ায় দিন দিন মানুষ এই ইটের প্রতি ঝুঁকছেন। অত্যাধুনিক এই ইট কিনতে দূরদূরান্ত থেকে আসছেন অনেকে।
দেশ বিদেশে কংক্রিট ইট তৈরি দেখে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এটি তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে উদ্যোগ নেন আদর্শ কংক্রিট ব্রিকসের উদ্যোক্তা আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম।
স্থানীয় দবিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই কংক্রিট ইট অনেকটাই মানসম্মত। এমন একটি অঞ্চলে এ ধরনের ইট তৈরি হওয়ায় ঘর-বাড়ি নির্মাণে মানুষের অনেক উপকার হচ্ছে।
আমিরুল নামে এরেকজন বলেন, আমাদের তেঁতুলিয়ায় ভাটা না থাকায় পঞ্চগড়ে গিয়ে ইট কিনতে হতো। তবে মানসম্মত ইট পেতে অনেক ব্যয় হতো। এখন নিজ এলাকায় ইট কারখানা হওয়ায় অনেকটাই কম খরচে আমরা তা প্রয়োজনমতো নিতে পারছি। এতে আমাদের অনেকটাই খরচ কমে এসেছে।
উদ্যোক্তা আলজাজ্ব রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই ইটে ভবন নির্মাণ করলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব; যা সচরাচর মাটি দিয়ে তৈরি ইটে সম্ভব না। পরিবেশবান্ধব এই কংক্রিট ব্রিকস ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ সহনীয় ও সর্বোপরি ব্যয় সাশ্রয়ী। এসিবি আদর্শ কংক্রিট ব্রিকসের কারখানায় প্রতিদিন ৩ হাজার কংক্রিটের ইট তৈরি হয়। আর প্রতিটিতে উৎপাদন খরচ হয় ১০ টাকা এবং বাজারে বিক্রি করা হয় ১১ টাকা করে।
তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পেলে এই কারখানা আরও বড় করে এখনকার চেয়েও মানসম্মত কংক্রিট ইট তৈরি করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
এফআর