মাদারীপুর: রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ দিনে মাদারীপুরের শিবচরে হাটে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৭ জুন) শিবচরের উৎরাইল হাটেও পর্যাপ্ত গরু-ছাগল বিক্রি হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। পশুর দামও ছিল যথেষ্ট বেশি।
এদিকে বুধবার (২৮ জুন) কুরবানির শেষ হাট বসেছে উপজেলার কুতুবপুরে। সকাল থেকেই স্থানীয় বিক্রেতারা গরু-ছাগল নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে হাটে এসেছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতারাও শেষ মুহূর্তে কিনছেন কোরবানির পশু।
বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে বেশ কষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে সারাক্ষণ। বিক্রিও হচ্ছে। বৃষ্টি না থাকলে দাম আরেকটু বেশি হতো। শেষ মুহূর্তে ছাগল বিক্রি হচ্ছে বেশি।
ক্রেতা ইব্রাহিম মুন্সী বলেন, ঈদের আগের দিন হাট থাকায় আগে কোরবানির গরু কেনা হয়নি। আজ কিনতে এসেছি। তবে বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পশুর দামও তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কুতুবপুর হাট সপ্তাহে দুই দিস বসে রোববার ও বুধবার। ঈদের আগের দিন হিসেবে বুধবার হাটে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল উঠেছে। স্থানীয়রা মূলত এই হাটের ওপর নির্ভরশীল। তবে বৃষ্টির কারণে হাটে দুর্ভোগে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনা-বেঁচা চলবে।
এদিকে, সাপ্তাহিক হাট ছাড়াও কোরবানি উপলক্ষে শিবচর পৌরসভার দাদা ভাই উপশহরে পশুর হাট রয়েছে। এ হাটে সকাল-সন্ধ্যা হাটে পশু পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া উপজেলা গ্রাম পর্যায়ের অন্যান্য সাপ্তাহিক হাট ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত শতাধিক স্থানে পশুর হাট বসেছে। শেষ মুহূর্তে হাটগুলোতে পর্যাপ্ত দেশীয় গরু দেখা গেছে। জেলা সদরের চরমুগরিয়া, মস্তফাপুর, হাউসদী, রাজারহাট, নতুন রাজারহাট, মাদ্রা, মঠেরবাজার, খোয়াজপুর, আচমত আলী ব্রিজের নিচে, ঝাউদীতে পশুর হাট বসেছে।
কালকিনি উপজেলার খাসেরহাট, ভূরঘাটা, ডাসার, খালেকের হাট। শিবচর উপজেলার উৎরাইল, নিলখী, কাঁঠালবাড়ী, দাদা ভাই উপশহর, সূর্যনগর, মাদবরেরচর, চান্দেরচর। রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট, হোসেনপুর, মাদেন্দ্রী, পাইকপাড়া, আমগ্রামসহ জেলার ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক স্থানে পশুর হাট বসেছে। সাপ্তাহিক হাট ছাড়াও কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাট রয়েছে এরমধ্যে।
মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বছর ঈদে জেলায় ৬৮ হাজার ৫২০টি গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খামারি রয়েছেন ১৯ হাজার ৫২০ জন। ছাগলের সংখ্যা ৩ হাজার ১১৫টি। গত বছর পশুর সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার। এ বছর চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত গরু রয়েছে ৬ হাজার ২৫০টি। কোরবানির জন্য ক্রেতারা যাতে সুস্থ সবল পশু পেতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আগে থেকেই খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, খামারিদের বাইরেও ব্যক্তিগতভাবে অসংখ্য গরু-ছাগল লালনপালন করে থাকেন কৃষকেরা। চলতি বছর দেশীয় সে সকল পশুও বিক্রি করেছেন ইতোমধ্যে। গতবারের তুলনায় এ বছর পশু বিক্রি করে লাভবান হবেন ক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
এসএম