ঢাকা: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। শেষ সময় পশু বিক্রিতে ব্যাপারীদের ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও এর উল্ট চিত্র গাবতলী পশুর হাটে।
বুধবার (২৮ জুন) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গাবতলী পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এ দিন গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটের বেশ কিছু স্থান ফাঁকা। কোরবানি পশু শূন্য। হাটের প্রায় অর্ধেক ফাঁকা। দুপর থেকে বিকেল পর্যন্ত কিছু ক্রেতা আসলেও গরুর দাম-দর করতে দেখা গেলেও কিনতে দেখা গেছে কম।
কুষ্টিয়া সদর থেকে ১৭টি গরু নিয়ে গবতলী এসেছেন মো. আক্তার। এ ব্যাপারী বলেন, আমি গত সোমবার ১৭টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। এখন আর আমার ৩টি মাঝারি গরু আছে। এগুলোর দাম ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা দামের। এখন হাটে ক্রেতার সংখ্যা কম। মঙ্গলবার অনেক ক্রেতা যেমন ছিল, ঠিক তেমন বিক্রিও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্রেতারা সঠিক দাম বলছে না। আড়াই লাখ টাকা দামের গরু ক্রেতারা দেড় লাখ-এক লাখ টাকা দাম বলছেন। বিক্রি করতে না পারলে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। আগামী বছর হাটে আবার আনবো। এখন হাটে ক্রেতা কম। বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম এসেছে।
রাজবাড়ীর ব্যাপারী মো. মুক্তার বলেন, আমরা ৫ জন মিলে গতো রোববার ৫০টি গরু এনেছি। এখন পর্যন্ত আমারা ৩০ গরু বিক্রি করেছি। আমাদের গরুর সর্বোচ্চ দাম ছিল ৮ লাখ টাকা আর সর্বনিম্ন ছিল দুই থেকে দেড় লাখ টাকা। আর আমাদের ২০টি গরু আছে। ক্রেতারা এখন ঠিকমতো দাম বলছে না। আশা করছি সন্ধ্যা-রাতে ক্রেতারা আসবে ও বিক্রি বাড়বে।
তিনি বলেন, আজকের বাজারে যদি সঠিক দাম না পাই ফিরিয়ে নিয়ে যাব। ক্রেতারা বাজার থেকে ৮০০ টাকা কেজি ধরে মাংস কিনতে পারে। কিন্তু হাটে আসলে ক্রেতারা সঠিক দাম বলে না। হাট থেকে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে গরু কিনতে চায়। এ কারণেই ফিরিয়ে নিয়ে মাংসের দোকানে গরু বিক্রি করে দিব। তখন ভালো দাম পাব।
কল্যাণপুর থেকে আসা ক্রেতা মো. আনোয়ার বলেন, ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছি। আশা করছি ৮ মণ গোশতে হবে। আল্লাহর খুশির জন্য কোরবানি দিচ্ছি। যে দামে কিনেছি শুকরিয়া।
মোহাম্মদপুর থেকে আসা ক্রেতা মো. জাফর বলেন, আমি ছোট গরু কিনবো। একটি ছোট গরুর দাম ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা দাম বলছি তাও দিল না। দাম চাইছে এক লাখ ৫ হাজার টাকা। ব্যাপারীরা দাম কমাচ্ছে না।
গাবতলী পশুর হাটের ব্যবস্থাপক আবুল হাসেম বাংলানিউজকে বলেন, আজকে হাটের বিক্রি অনেক কম। গতকাল (মঙ্গলবার) বিক্রি ভালো ছিল। বৃষ্টি না হলে আশা করছি সন্ধ্যা-রাতে বিক্রি বাড়বে।
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) বিডিএফএর সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, খামার পরিচালনায় আনুষঙ্গিক সব খরচই ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তবে মানুষের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় গো-খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, সে হারে পশুর দাম বাড়ানো যায়নি। খামারিরা লাভের অঙ্ক কমিয়ে গরু বিক্রি করছেন। তবু অন্যান্য বছরের মতো কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকলে তারা ভীষণ চাপে পড়বেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
এমএমআই/জেএইচ