ঢাকা: ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনে সকাল থেকেই থেমে-থেমে হচ্ছিল বৃষ্টি। তবে দুপুর থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি।
শনিবার (১ জুলাই) খিলগাঁও, বাসাবো এবং বনশ্রী এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে জলাবদ্ধতার এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে এসব এলাকার বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত দীর্ঘদিন ধরে স্যুয়ারেজ লাইনগুলো পরিষ্কার না করায় কিছু কিছু স্থানে সেগুলো ব্লক হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেশি দেখা গেছে।
টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দক্ষিণ বনশ্রীর জে ব্লকের প্রতিক হাউজিংয়ের বাসিন্দা মো মেহেদী হাসান সৌরভ ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর বর্ষায় কোনো ধরনের জলাবদ্ধতা ছিল না। তবে এ বছর বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার হচ্ছে। প্রায় তিন বছর আগে দক্ষিণ বনশ্রী সমস্ত রাস্তা কেটে স্যুয়ারেজ লাইন বসানো হয়। ফলে প্রায় দুই বছরের মতো কিছুটা শান্তিতে থাকা গেছে। এ লাইনের কাজ শেষ হওয়ার আগে একটু বৃষ্টি হলেই দক্ষিণ বনশ্রীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। অনেক দিন ধরে এলাকার কোনো স্যুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার করতে দেখিনি। যে কারণে লাইগুলো ময়লা আবর্জনায় ব্লক হয়ে বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। সে বছর তিন বছর আগের জলাবদ্ধতা এখন আবার দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, অথচ দক্ষিণ বনশ্রীর পাশে একটি বড় খাল রয়েছে। এ এলাকায় পানি জমারই কথা ছিল না। বর্ষা শুরু হওয়ার আগে যদি সিটি করপোরেশন স্যুয়ারেজ লাইনগুলো পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিতো তাহলে হয়তো এত পরিমাণে পানি জমা হতো না৷ পানি জমলেও দ্রুত পানি নেমে যেত।
তবে জলাবদ্ধতার কারণে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে মোটরসাইকেল এবং সিএনজিসহ প্রাইভেট কার চালকরা। অতিরিক্ত পানি জমে থাকায় গাড়ির সাইলেনসার পাইপে পানি ঢুকে বারবার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যেতে দেখা গেছে অনেক গাড়ির। পাশাপাশি এ ময়লা পানি পাড়িয়ে অনেককে যেতে হচ্ছে তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে। অনেকে আবার রিকশায় করে যাতায়াত করছেন।
দক্ষিণ বনশ্রীর গোড়ান আট নাম্বার সিএনজি স্ট্যান্ডের রাস্তায় জমে থাকা পানির স্থানটুকু সাধারণ মানুষকে রিকশা দিয়ে পারাপার করিয়ে দিচ্ছিলেন রিকশা চালক মেহেদি মুজিব। কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খিলগাঁ বাসাবো ও গোড়ান এলাকার বেশিরভাগ স্থানেই পানি জমেছে। পানি জমায় রিকশা চালাতে কষ্ট হয়। কিন্তু অল্প জায়গা পারাপার করিয়ে দিলে তুলনামূলক বেশি ভাড়া পাওয়া যায়৷
গোড়ান এলাকার হাড়ভাঙ্গা মোড়ে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতায় মোটরসাইকেল ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন সবুজ নামে এক মোটরসাইকেল চালক। সাইলেন্সার পাইপে পানি ঢুকাতে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে এ রোডে এত পানি থাকবে, জানলে এ রোডে আসতাম না। পানি ঢুকে বাইক বন্ধ হয়ে গেছে। সামনে একটি মোটরসাইকেল ঠিক করানোর গ্যারেজ আছে সেখানে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছি। এখন ভালোয় ভালোয় ইঞ্জিনে পানি না ঢুকলেই বাঁচি। তবে হঠাৎ করে এ রাস্তায় কেন এত পানি জমেছে তার কারণ বুঝতেছি না। স্বাভাবিকভাবে এ রোডে পানি জমতে দেখা যায় না।
এসব এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা আটকে পানি নেমে যাওয়ার পাইপগুলো জ্যাম হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের এ পাইপগুলো যদি পরিষ্কার করা হয় তাহলে জলাবদ্ধতা হতো না। দ্রুত বৃষ্টির পানি নেমে যেত। তাই অতিদ্রুত জনস্বার্থে এসব এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ লাইনগুলো পরিষ্কার করতে সিটি করপোরেশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ