ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাগর নন্দিনী-৪

মৃত্যুর ঝুঁকি জেনেও জাহাজটিকে সরিয়ে আনতে যান ফায়ার ফাইটাররা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৩
মৃত্যুর ঝুঁকি জেনেও জাহাজটিকে সরিয়ে আনতে যান ফায়ার ফাইটাররা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে দ্বিতীয় দফায় সাগর নন্দিনী-২ নামের তেলবাহী ট্যাংকার বিস্ফোরণের পর লাগা আগুন নিভে গেছে। আর এ আগুন নেভাতে গিয়ে স্থানীয় ফায়ার ফাইটারদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (০৪ জুলাই) সকাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ প্রশংসা করেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস পরিচালক বলেন, আমাদের ফায়ার ফাইটাররা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে আগুনের খুব কাছাকাছি গিয়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছেন। যখন সাগর নন্দিনী-২ নামের তেলবাহী জাহাজটি পুরোপুরি আগুনের মধ্যে ছিলে, তখন আমাদের টার্গেট ছিল সাগর নন্দিনী-৪ নামের জাহাজটিকে সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন করে সরিয়ে নেওয়া। আর আমাদের বড় সফলতা সাগর নন্দিনী-৪ জাহাজটি বিচ্ছিন্ন করে
নিরাপদ দূরত্বে নিতে আসতে পারাটা। কাজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সাহসিকতার সঙ্গে ফায়ার ফাইটাররা এটি করেছে। আর এটা না হলে ঘটনা ব্যাপকতা আরও বাড়তে পারত।

তিনি বলেন, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ছাড়া আমাদের ১২টি ইউনিট এখানে আগুন নেভাতে কাজ করেছে। তবে তেলের আগুনে পানি দিলে আরও বৃদ্ধি পায়। আর আমরা পানি দিয়ে আগুন নির্বাপণ করতে পারছিলাম না, সব সময় ফোম দিয়ে আগুন নির্বাপণ করার চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের সিস্টেম অনেক ছিল এবং আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছি।

এদিকে জাহাজটি সরিয়ে আনার সময় ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল নদী ফায়ার স্টেশনের লিডার নজরুল ইসলাম বলেন, যেকোনো অগ্নিকাণ্ড বা উদ্ধার অভিযানে জীবন হাতে নিয়েই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে গতরাতের কাজে ঝুঁকি খুবই বেশি ছিল। একে তো রাতের বেলা কাজ করতে হয়েছে, তার ওপর এতো কাছাকাছি গিয়ে আগুনের তাপে কাজ করতে হয়েছে যে বার বার ফায়ার ফাইটারদের গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল।  আবার অনেকের শ্বাস নিতে কষ্ট হলেও কাজ চালিয়ে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, নদীর মধ্যে রাতের অনেক কিছুর সংকট থাকলেও শুধু আমাদের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সব বাধাই অতিক্রম করে চার ঘণ্টার মধ্যে সাগর নন্দিনী-৪ জাহাজটিকে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজ থেকে আলাদা করতে সক্ষম হই। আলাদা করার সময় ঝুঁকি এতটাই ছিল যে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটলে যে কারও প্রাণহানি ঘটতে পারত। এরপর আমাদের অগ্নিঘাতক জাহাজ দিয়ে সেটিকে টেনে নিরাপদ দূরত্বে রেখে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজের আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। সকাল ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ আগুন নিভে যায়।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয়বারের ভয়াবহতা ছিল প্রকট, পানির ওপরেও জ্বলছিল আগুন
                      ১০ ঘণ্টা পর আগুন নিভেছে সাগর নন্দিনী-২ তেলের ট্যাংকারের
                      ঘটনাস্থল এখন বিস্ফোরণমুক্ত: ফায়ার সার্ভিস
                     তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে: নৌ-পুলিশ

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২৩
এমএস/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।