লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মো. সিরাজুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ভিজিএফ চালের ভুয়া টোকেন বানিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কমলনগর আমলি অঞ্চলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. তারেক আজিজ স্ব-প্রণোদিত হয়ে বুধবার (৫ জুলাই) এ আদেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
এর আগে পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদের সূত্র ধরে আদালতের বিচারক সেটি পর্যালোচনা করে এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালতের নাজির মো. ইয়াসিন আরাফাত আদেশের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে আদালতের বিচারক স্ব-প্রণোদিত হয়ে ক্রিমিলান প্রসিডিউর কোড-১৮৯৫ এর ১৯০ (১১)(সি) ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মেম্বার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৪০৬, ৪১৭ ও ৪২০ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করার আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১৫ জুন লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় একটি পত্রিকায় 'কমলনগরে নকল টোকেনে চাল নিতে এসে প্রতারিত অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষ' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভিজিডি চাল চার হাজার ৬৫০ জন লোকের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণের জন্য লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে ৪৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
চাল বিতরণ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিষদের সব সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রত্যেক নামের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সিল সম্বলিত টোকেন সিস্টেমের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ হাজার ৬৫০ নামের জন্য ৪ হাজার ৬৫০টি টোকেন পরিষদের সব সদস্যদের দিয়ে বিতরণ করা হয়। টোকেন দেখে চাল বিতরণ শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার, চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যরা।
চাল বিতরণের একপর্যায়ে কয়েকজন একাধিক নকল টোকেনসহ ধরা পড়ে চাল বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক শতাধিক টোকেনসহ ধরা পড়ে। এরা সকলে ওই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বলে জানায়।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ভিজিএফ’র ১০ কেজি চাল পেতে তাদের টোকেন দিয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন। তবে টোকেনগুলা যে নকল তা তারা জানতেন না।
এ ঘটনার পর চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নুরুল আমিন টোকেনগুলো জব্দ করেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।
চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, সিরাজ মেম্বারকে ১৯০টি টোকেন দেওয়া হয়েছে। সে চালের সংকট করে আমাকে বিপদে ফেলানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত টোকেন ছাপিয়ে তার ওয়ার্ডে বিলি করে। এর আগেও সে এমন কাজ করেছে। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২৩
আরএ