ঠাকুরগাঁও: আলোচিত রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির সেই ছাত্রী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ১৬ জুলাই (রোববার) ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন সিনথিয়া ইসলাম তিশা।
আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গত ২২ জুন ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ছাত্রী ঠাকুরগাঁও আদালতে যান এবং তার স্বামী মুশতাক তাকে অপহরণ বা ধর্ষণ করেনি বলে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে ওই ছাত্রী আদালতের মাধ্যমে নিজ জিম্মায় স্বামী মুশতাক আহমেদের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন।
আদালতের জবানবন্দির বিষয়ে জানতে চাইলে মুশতাকের আইনজীবী মো. সাহাবুদ্দিন খান লার্জ বলেন, অপহরণের ঘটনায় সিনথিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে খন্দকার মুশতাকের বিরুদ্ধে গত ২২ জুন ঠাকুরগাঁওয়ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ঠাকুরগাঁও সদর থানাকে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় ভিকটিম নিজে আদালতে এসে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর ছাত্রী নিজ ইচ্ছায় তার স্বামী মুশতাককে সঙ্গে ঢাকায় চলে যান।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের বাবা তার বয়স ১৬ উল্লেখ করে মামলা করেন। কিন্তু আদালত সিনথিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দেখেন যে তার বয়স ১৮ বছর চার মাস। অর্থাৎ তিনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক। তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে।
মুশতাক আহমেদ বলেন, তার (সিনথিয়া) বাবা যে মামলা করেছেন, তার মেয়ের জবানবন্দির মাধ্যমে আবারও সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন বলেন, ঠাকুরগাঁও আদালত থেকে বের হওয়ার পর মেয়ের বাবা স্থানীয় মাস্তান ও লোকজন দিয়ে আমার এবং আমার আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। একপর্যায়ে তার মেয়েকে জোর করে নিয়ে যেতে চান, কিন্তু সিনথিয়া তার সঙ্গে যাননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, মুশতাক ও তার আইনজীবীর ওপর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। ১৬ জুলাই তারা আদালতে আসবেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। খবর পেয়ে বিকেলে আমি ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাই। ততক্ষণে জবানবন্দি দেওয়া শেষ হয়ে যায়। তাহলে হামলা করলাম কীভাবে?
ওই ছাত্রী জবানবন্দিতে তাকে অপহরণ ও ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে আদালতকে জানান। এমনকি ঠাকুরগাঁও থানার তদন্ত কর্মকর্তা ওই ছাত্রীর মেডিকেল ও ডিএনএ রিপোর্ট করাতে চাইলে সিনথিয়া তাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমি কোনো ধর্ষণ বা অপহরণে শিকার হয়নি। তাই এসব রিপোর্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই।
সিনথিয়া আদালতকে আরও বলেন, আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও সাবালিকা। নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আমার আছে। আমি মুশতাককে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেছি। তিনি কোনো জোর জবরদস্তি করেননি। আমার বাবা যে মামলা করেছেন, আমার স্বামীকে হয়রানি করার জন্যই করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
এসআইএ