চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন করে নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর জানান, গত কয়েক মাস ধরেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে জুলাই মাসে এর প্রকোপ আরও বেড়েছে। এই মাসে এখন পর্যন্ত ১১০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৭২ জন, নারী ৩৫ জন ও শিশু তিনজন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১২ জন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামের ডেঙ্গু আক্রান্ত মো. আলিফ (১৫) জানান, প্রথমে আমার জ্বর হয়। আমার চোখ লাল হয়ে যায়। জ্বর না কমায় হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করাই। এরপর ডেঙ্গু ধরা পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি দেন চিকিৎসক।
চিকিৎসাধীন অপর রোগী মো. শরীফুল ইসলাম (২৫) জানান, তিনি গত দুই দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু রোগী বাড়ে। তবে এ বছর রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগে থেকেই আশঙ্কা করেছে এবং আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। সেই আলোকে আমরা পুরুষ ডেঙ্গু রোগীর জন্য ১৬ এবং নারী রোগীর জন্য আটটি বেড প্রস্তুত রেখেছি এবং চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। রোগীর চাপও আছে। আশার কথা হচ্ছে এখন পর্যন্ত চাঁদপুরে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে বর্ষা যতদিন থাকবে, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়বে। আমরা এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাখাওয়াত জানান, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) চাঁদপুর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৭ জন। হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছে ৮৮ জন। সদর ও উপজেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে সদরে ভর্তি ২৯ জন, ফরিদগঞ্জে ১৫, শাহরাস্তি ৫, কচুয়ায় ১১, হাজীগঞ্জে ৫, মতলব দক্ষিণে ১০, মতলব উত্তরে ৮ ও হাইমচরে ৫ জন।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজন কুমার দাস বলেন, ডেঙ্গু রোগী দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
এফআর