ঢাকা: সরকারের নানামুখী উন্নয়ন ও পদক্ষেপে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি সহজ হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতে ন্যায়বিচার পাবে, সেই নিশ্চয়তা, সেই আত্মবিশ্বাস মানুষের মাঝে ফিরে এসেছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’ স্মারকসৌধ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিচারব্যবস্থা এবং এ বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব ব্যবস্থায় আমি মনে করি, ন্যায়বিচার প্রাপ্তি অত্যন্ত সহজ হচ্ছে এদেশের মানুষের জন্য। কাজেই এটা করার ফলে যে যেখানেই থাকুক ন্যায়বিচার যে পাবে, সেই নিশ্চয়তা, সেই আত্মবিশ্বাস মানুষের মাঝে আসছে।
তিনি বলেন, আজ অনলাইনে কজলিস্ট যাচ্ছে, ঘরে বসে মানুষ দেখতে পাচ্ছে, ভার্চ্যুয়াল কোর্ট পরিচালনা হচ্ছে। প্রতিটি আইন ডিজিটালি সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মামলার রায়গুলো বাংলায় দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আদালতে মামলার রায় নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিবরণী অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। সবাই জানতে পারছে কার মামলা কী অবস্থায় আছে।
স্মার্ট জুডিশিয়ারি করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। স্মার্ট জুডিশিয়ারি সেটিও করার পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ অর্থাৎ স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট ইকোনোমি, স্মার্ট সোসাইটি, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি, আমাদের গভর্নমেন্ট, আমরা স্মার্ট গভর্নমেন্ট করছি, কাজেই সেই ক্ষেত্রে স্মার্ট জুডিশিয়ারি একান্তভাবে প্রয়োজন। সেই পথে আপনারা বহুদূর এগিয়ে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশে মানুষের ন্যায়বিচার, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের আর্থ-সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার যেন নিশ্চিত থাকে। বাংলাদেশ তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাবে।
আগামীতে একটি আইন বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেন সরকারপ্রধান।
দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, সেই অবস্থাও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছি আমাদের অর্থনীতির চাকাটা যেন কোনোভাবে থেমে না যায়। সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চাই। কাজেই এক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতাও একান্তভাবে দরকার।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। একসময় ছিল সাহায্য চাওয়া, হাত পাতার বাংলাদেশ, এখন আর সেই বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাক। আমরা যখনই সরকারে এসেছি কাজ করে যাচ্ছি।
ভার্চ্যুয়াল কোর্টের সুফল হিসেবে মামলাজট কমেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্ট তৈরি করার ফলে আজ মামলার জট কমে গেছে। মামলাগুলো নিষ্পত্তি হচ্ছে। মানুষ দ্রুত বিচার পাচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’ স্মারকসৌধটি নির্মাণ করা হয়। এতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৬৯ জন আইনজীবীর নাম লেখা আছে।
একই অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের রেকর্ড ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এমইউএম/আরএইচ