ঝালকাঠি: সুগন্ধা নদীর অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে নলছিটি-দপদপিয়া আঞ্চলিক সড়ক। নলছিটি উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বরিশাল সদরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটির কিছু অংশ যেকোনো সময়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বরিশাল সদরের সঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ।
নলছিটি বন্দর থেকে একটু সামনে এগোলে মল্লিকপুর নামক স্থান থেকে শুরু করে খোজাখালি পর্যন্ত সড়ক থেকে নদীর দূরত্ব মাত্র ৫ থেকে ৭ ফুট। প্রতিদিন বিশাল বিশাল মাটির খণ্ড নদীতে ভেঙে পড়ছে। দপদপিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ে সড়কে।
স্থানীয়রা ভাঙন রোধে নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। বষার্য় ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পরেছেন স্থানীয়রা। যদিও এসব পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জানা গেছে, এই সড়কটির মোট দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। দুবছর আগে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি দুই পাশে তিন ফুট করে চওড়া করে সংস্কার করা হয়েছে। তাই বিগত দিনের চেয়ে বর্তমানে সড়কটি এই অঞ্চলের মানুষদের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া নলছিটি শহর থেকে শুরু করে তার আশপাশের ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন তাদের পণ্য এই সড়ক দিয়েই পরিবহন করেন। তাই স্থানীয়দের দাবি অচিরেই যেন ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
নলছিটি পৌর শহরের চাল ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন, এই সড়ক দিয়েই নলছিটি বন্দরের ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়া করে থাকেন। আমরা চাল ব্যবসায়ীরা উত্তরাঞ্চলের শহরগুলো থেকে ট্রাকে করে এই সড়ক দিয়েই চাল নিয়ে আসি। সড়কটির ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো যদি নদী গর্ভে চলে যায় তাহলে আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো। বিকল্প পথে পণ্য আনতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে। যার কারণে আমরা ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তাই সড়কটির ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সূর্যপাশা এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজ ও নিত্যদিনের বাজার করার তাগিদে আমাদের নলছিটি বন্দরে প্রতিদিন কম করে হলেও তিন/চার বার যাতায়াত করতে হয়। এখন যদি এই সড়ক নদীতে ভেঙে যায় তাহলে আমাদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম স্বপন বলেন, সুগন্ধা নদীর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার কথা শুনেছিলাম তবে তার কোনো অগ্রগতি নেই। যদি প্রকল্পটি চালু হতো তাহলে এখানের মানুষের দুর্ভোগ লাগব হতো।
তিনি আরও বলেন, মূলত ইউ আকৃতির হওয়ায় এখানে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেশি। প্রবল স্রোতের চাপে নদীর নিচের মাটি সরে গিয়ে উপরের মাটি ভেঙে পড়ছে। যদি নদীর নিচের অংশে কংক্রিটের ব্লক দিয়ে শক্ত বাঁধ দেওয়া হয় তাহলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম নিলয় পাশা বলেন, ঝালকাঠির বিভিন্ন অঞ্চলের নদী ভাঙন রোধে ৮৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই প্রকল্প গৃহীত হলে নদী ভাঙনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। আপাতত কিছু কিছু জায়গায় বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২৩
আরএ