ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা শতাধিক পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৩
মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা শতাধিক পরিবার

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা সদরের পশ্চিমে পদ্মা-মেঘনা নদীর ভাঙন বছরজুড়ে অব্যাহত থাকে। তবে বর্ষা আসলে ভাঙন আতংকে বেড়ে যায় চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের।

 

বর্তমানে সদরের ইব্রাহীমপুর ও শরীয়তপুর জেলার চরছেনসাস এলাকায় ভাঙন বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে স্থানীয়দের আতংক দিন দিন বাড়ছে। সম্প্রতি প্রায় দেড় শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে অনেকেই ছিন্নমূল হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর পশ্চিমে অধিকাংশ এলাকাই শরীয়তপুর জেলা সীমান্তে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান হচ্ছে ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের একাংশ আলু বাজার ফেরিঘাট। ঘাটের একাংশ রয়েছে ইউনিয়নে। এই স্থানটির প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ ও শত শত বসতি গত কয়েকমাস ধরে মেঘনা গর্ভে বিলীন হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা দেয়। বর্ষার পানি কমা শুরু করলে ভাঙন আরো তীব্রতা বাড়ে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,  অস্থায়ীভাবে স্থানীয়রা নিজেদের বসতভিটা রক্ষা করার চেষ্টা করলে তা হচ্ছে না। তারা বাঁশ দিয়ে বাঁধ তৈরি করে সম্পত্তি রক্ষার চেষ্টা করছেন। কিন্তু স্রোত আর ঢেউয়ের সঙ্গে তা কুলিয়ে উঠছে না।

ইব্রাহীমপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ ও সোলায়মান জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ী ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁশ দিয়ে বাঁধ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও ভাঙন প্রতিরোধ হচ্ছে না। এখান থেকে অন্যত্র গিয়ে বাড়ি তৈরি করার সামর্থ্যও নেই তাদের। যে কারণে ভাঙনের মুখে তারা অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে আছেন। আতংকের মধ্যেই তাদের প্রতিটি রাত কাটে। সরকারের কাছে দারি একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে তাদের বসতভিটা রক্ষায় যেন এগিয়ে আসেন।

চরছেনসাস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার বালা জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বসতি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সরকারকে এই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। কারণ আমাদের সামর্থ্য নেই এই ভাঙন প্রতিরোধ করা।

ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী আবুল কাশেম খান জানান, ভাঙন এলাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। কয়েকবার বালু ভর্তি অস্থায়ীভাবে জিও টেক্সটাইল ব্যাগ দিয়ে ভাঙন এলাকায় প্রতিরোধের চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু বর্ষা এলে এবং পানি কমলে ভাঙন বাড়তে থাকে। স্থায়ী বাঁধ দিয়ে এলাকা রক্ষা করা খুবই জরুরি।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইব্রাহীমপুর ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এটির ডিজাইন ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে। এই অর্থ বছরের শুরুতে আমরা এটি দাখিল করব। পাশাপাশি যেখানে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানে পরিদর্শন করেন খুব দ্রুত সময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।