ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, আধুনিক ক্রীড়া জগতের অন্যতম পথিকৃৎ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে জাপানের টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
শনিবার (৫ আগস্ট) এ উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী সবার উদ্দেশে পাঠ করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে শেখ কামাল স্মরণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। তিনি ছিলেন একাধারে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক। তিনি যেমন ছায়ানটে সেঁতার বাজিয়েছেন, তেমনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র নামে ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া আধুনিক ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটার ও স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক। ১৯৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন শহীদ শেখ কামাল। তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ কামাল যার শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্ত বহমান ছিল, তিনি ছিলেন অনেক গুণের অধিকারী। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠনে ব্যস্ত তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য শেখ কামাল দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে বিশ্ব-দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। যারা তার সান্নিধ্যে এসেছেন তারা অনুভব করেছেন তার স্নিগ্ধ, হাস্যোজ্জ্বল, মমত্ববোধসম্পন্ন চরিত্র। সৃষ্টি আর সম্ভাবনায় ঠাসা ছিল তার এ সংক্ষিপ্ত জীবন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের গুলিতে শাহাদাতবরণকারী শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল তার সক্রিয় কর্মজীবন, দৃপ্ত পদচারণা ও অতুলনীয় অবদানের জন্য বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে চির অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।
আলোচনা পর্বে শেখ কামালের কর্মময় জীবন সম্পর্কে বক্তারা আলোকপাত করেন। আলোচকরা বলেন, শেখ কামাল ছিলেন একজন সৃজনশীল উদ্যমী প্রাণবন্ত ও রাজনীতি সচেতন তরুণ, যিনি মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন আবার যুদ্ধ পরবর্তী একজন সংগঠক হিসেবে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে তরুণদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
বক্তারা বলেন, তারুণ্যের প্রতীক শেখ কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো বর্তমান বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতেন, গড়ে তুলতেন আধুনিক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ। তার জীবন ও কর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য আলোচকরা আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশে আধুনিক ক্রীড়া জগতের রূপকার শেখ কামালের কর্মজীবনের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২৩
টিআর/আরবি