ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জালরুপিতে চোরাচালান, জালটাকায় মাদক কারবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৩
জালরুপিতে চোরাচালান, জালটাকায় মাদক কারবার

ঢাকা: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কাজীপুর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন রবিন ২০০৭ সাল থেকেই জালরুপি তৈরি করতেন। মাঝে কিছুদিন বন্ধ রেখে ২০২০ সালে আবার শুরু করেন জালরুপি তৈরি।

এসব রুপি দিয়েই ভারতে পণ্য চোরাচালান করতেন। আর জালটাকা তৈরি করে মাদক চোরাচালানসহ স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করতেন।

সাজ্জাদসহ এ জালটাকা তৈরি ও বাজারজাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার বাকি দুইজন হলেন মাহি ও সাদমান হোসেন হৃদয়।

শুক্রবার (০৪ আগস্ট) লালবাগ থানার আরেনডি রোডস্থ শ্মশানঘাট কালিমন্দির এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে এক লাখ জালরুপি, ১০ লাখ ২০ হাজার জালটাকা এবং এগুলো তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। চক্রটি এখন পর্যন্ত পাঁচ কোটির বেশি ভারতীয় জালরুপি বাজারজাত করেছে।

শনিবার (০৫ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।

তিনি বলেন, শুক্রবার (০৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় লালবাগ শ্মশানঘাট কালিমন্দিরের সামনে থেকে মাহিকে বাংলাদেশি এক হাজার টাকার ৫০টি জালনোটসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে, তার মামা সাজ্জাদ হোসেন রবিন ও সাদমান হোসেন হৃদয়কে কেরানীগঞ্জের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চক্রের মূলহোতা সাজ্জাদ হোসেন রবিন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। ২০০৭ সালে শহীদ নামের তার একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি এই ধরনের জালটাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই সূত্রে জালটাকা তৈরি শুরু করেন সাজ্জাদ।

শহীদ মারা যাওয়ার পরে জালটাকা তৈরি বন্ধ করে দেয় সাজ্জাদ। এরপর তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। করোনাকালে তার ব্যবসায় ধস নামে। কর্মীদের বেতন দিতে পারছিলেন না বলে কর্মীরা তার বাড়িতে এসে ভিড় করে।

তখন কি করবে তা চিন্তা করেই জালটাকা বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত হুমায়ুন কবির সিকদার ও শফিউল্লাহ্ সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা জালটাকা তৈরির জন্য কাজ করে দিতে বলে।

২০২০ সাল থেকে সাজ্জাদ আবারও জালটাকা বিশেষ করে জালরুপি ছাপানো শুরু করেন। এখন পর্যন্ত এই চক্রের মাধ্যমে পাঁচ কোটির বেশি জালরুপি বাজারজাত হয়েছে।

ডিসি বলেন, এই রুপি মূলত সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালান কাজে ব্যবহার করা হতো। শাড়ি, মাদক বা বিভিন্ন সামগ্রীর মূল্য তারা জালরুপি দিয়ে পরিশোধ করে।

জালটাকা তৈরির বিষয়ে ডিসি বলেন, পলাতক আসামি হুমায়ুন কবির সাজ্জাদকে কিছু জালটাকা তৈরির কথা বলেন। এই জালটাকা দিয়ে টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে আসবে। সর্বশেষ এই জালটাকা তারা ছাপানো শুরু করেছিলেন। এছাড়া, এসব জালটাকা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দিতেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২৩
পিএম/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।