ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২৩
খুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ

খুলনা: খুলনা নগরীর ফুলবাড়ীগেটের তেলীগাতি-কেডিএ বাইপাস সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন, অবহেলায় যাতায়াতের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

 

গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির গভ.ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সামনে থেকে তেলিগাতী পাকারমাথা হয়ে কেডিএ সিটি বাইপাস সড়কের প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার রাস্তার অধিকাংশ স্থানের কার্পেটিং এবং খোয়া উঠে বড়বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে।  

কয়েকদিনের বর্ষায় গর্তগুলো খাদে পরিণত হওয়ায় বর্তমানে সড়কটি দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট যানবাহনগুলো চলছে চরম ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) কর্তৃক সড়কটি নির্মাণের দীর্ঘ একযুগেও কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কটির অবস্থা বর্তমানে বেহাল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ীগেট-তেলিগাতী পাকারমাথা পর্যন্ত সড়কটি বর্ধিত করে ২০১০ সালে খুলনা মংলা হাইওয়ে কেডিএ বাইপাস সড়কের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয়। শহরের যানবাহনের চাপ কমাতে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) সোয়া এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩০ ফুট চওড়া এই সড়কটি নির্মাণ করে। নির্মাণের পর সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছে হস্তান্তর করে। কেডিএ এবং এলজিইডির রশি টানাটানিতে নির্মাণের পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও কোনো সংস্কার কাজ হয়নি সড়কটির। বর্তমানে সড়কের অধিকাংশ স্থানের কার্পেটিং এবং খোয়া উঠে বড়বড় খানাখন্দে পরিণত হয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।  

জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), গভ.ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়, এইচএসটিটিআই, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার, খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টিটিসি খুলনা, খানজাহান আলী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, জনতা ব্যাংক কুয়েট কর্পোরেট শাখা, কুয়েট পোস্ট অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে।  

এছাড়াও তেলিগাতী, খানাবাড়ী, রংপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। সড়কটি দিয়ে বর্তমানে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, সাইকেল, ব্যাটারিচালিত ভ্যান, রিকশাসহ ছোটখাটো যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। বাস ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ ভারী যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত সময়ে সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এগিয়ে এসে সহযোগিতার হাত বাড়াবে এমনটাই আশা করেছে ভুক্তভোগী মানুষেরা।

এ বিষয়ে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী(এলজিইডি) আবু তারেক সাইফুল কামালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০২১ সালে সড়কটি সংস্কারে প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাকেজ (চুক্তি) প্রস্তাবনা আকারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। যাতে খরচ ধরা হয়েছিল ২ কোটি ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।  

তিনি বলেন, হেড অফিস জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় খুলনাকে চিঠি দিয়ে সড়কটি বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছে। ব্যয়বহুল এই সড়কটির সংস্কারের জন্য যে প্যাকেজ প্রস্তাবনা আকারে পাঠানো হয়েছিল তার টাকার উৎস পাওয়ায় দ্রুত সময়ে সড়কটির কাজের অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

খুলনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আনিছুজ্জামান বলেন, জনদুর্ভোগ বিবেচনায় দ্রুত সময়ে সড়কটির সংস্কার কাজের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আমার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।  

তিনি বলেন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) কর্তৃক সড়কটি নিমার্ণের পর আর কোনো সংস্কার কাজ তারা করেনি। তাছাড়া এক ডিপার্টমেন্ট  নির্মাণ করার পর অন্য ডিপার্টমেন্ট সেই প্রকল্পের কাজ করতে চায় না। এটাই হলো সড়কটি সংস্কার না হওয়া বড় সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে আমি ঢাকা হেড অফিসে কথা বলেছি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে এ সড়কের সংস্কার কাজ করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২৩
এমআরএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।