ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নানা আয়োজনে রাজশাহীতে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
নানা আয়োজনে রাজশাহীতে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন

রাজশাহী: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী মঙ্গলবার (৮ আগস্ট)। নানা আয়োজনে রাজশাহীতে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।

তাকে স্মরণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করে।

এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। সভায় বক্তারা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদান তুলে ধরেন।

ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, মাত্র ৪৫ বছরের জীবনে বঙ্গমাতা তার নিজের কথা না ভেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। কীভাবে দেশের মানুষকে ভালো রাখা যায়, মানুষের খোঁজ-খবর নেওয়া যায় তা তিনি ভাবতেন। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, তখন তিনি দেশের সামগ্রিক সংবাদ তাকে জানানো ও তার সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমরা অনেকেই বঙ্গমাতাকে চোখে দেখিনি, কিন্তু তার ছবি দেখেছি। বঙ্গমাতার সব ছবিতেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষের অবয়ব ফুটে ওঠে। তার দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময়। তিনি কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি না নিয়ে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু হওয়ার পেছনে শেখ ফজিলাতুন্নেছার অবদান সব থেকে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছিল। কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে বলেছিল, কেউ নিষেধ করেছিল। কিন্তু বঙ্গমাতা জনগণের চোখের দিকে তাকানোর পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন ‘জনগণ যা চায় এবং তোমার মন থেকে যে কথা বের হবে, সেটাই তুমি বলবে। ’ বঙ্গবন্ধু সেদিন তাই করেছিলেন। যে ভাষণ এখন সারা বিশ্বের সেরা কয়েকটি ভাষণের একটি এর নেপথ্যে ছিলেন মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বঙ্গমাতা স্বামীর সহযোদ্ধা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সন্তানরা বলেছেন আমার মা একজন গেরিলা যোদ্ধা। আমার বাবার পেছনের একমাত্র চালিকা শক্তি। এ সময় তিনি বঙ্গমাতার জীবনী থেকে নারীদের শেখার পরামর্শ দেন।

রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. অলীউল আলম অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, আরএমপির কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী জেলার ১২৫ জন অসচ্ছল নারীর হাতে সেলাই মেশিন ও স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিগুলোর মধ্যে ১৭৯টি সমিতির অনুকূলে ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়।

এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৪০ জন অসহায়, অসচ্ছল নারীকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।