মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সিটি হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে জরায়ু অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অপারেশনের পর থেকেই নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন রোগী রেহানা আক্তার।
ভুক্তভোগী রেহানা আক্তার শিবালয় উপজেলার নয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী।
জানা যায়, চলতি বছরের ২ জুলাই মানিকগঞ্জ শহরে অবস্থিত সিটি হাসপাতালে রেহানা আক্তারের জরায়ু অপারেশন করেন ডাক্তার এমদাদ। অপারেশনের সাত দিন পর ড্রেসিং করে সেলাই কেটেও দেওয়া হয়। এর পর দিন যত যায় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বাড়তে থাকে পেটের ব্যথা, যন্ত্রণার পাশাপাশি পেট ফুলে ওঠে। পরে অন্য এক চিকিৎসকের কাছে গেলে, বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা যায় পেটে গজ রেখেই ডাক্তার সেলাই করে দিয়েছেন।
সেসময় অভিযুক্ত চিকিৎসক এমদাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন রোগীর ক্ষেত্রে এমন হয়েছে তা মনে করতে পারছি না তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।
এর পর থেকে ওই চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
রেহানা আক্তারের বর্তমান চিকিৎসক ডাক্তার আরিফুর রহমান বলেন, আমার কাছে যখন রেহানা আক্তার আসেন ওই সময়টাতে তার অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। আমি বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাই, এখানে দেখা যায় তার পেটের ভেতর গোল কোনো কিছু আছে। প্রথমে ভেবেছিলাম টিউমার, সেজন্য এ বিষয়টি তার আত্মীয়-স্বজনদের জানাই। অপারেশনের সময় দেখা যায় পেটের ভেতর গজ রয়েছে। পেটের ভেতরে নাড়ি পচে গেছে এবং প্রচুর পুঁজ বের হয়েছে। অনেক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও অপারেশন সফলভাবে করা হয়।
সিটি হাসপাতালের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত ২ জুলাই ১৯ হাজার টাকা কন্টাক্টে রেহেনা আক্তারের জরায়ু অপারেশন করা হয়। ডাক্তার এমদাদ ওই অপারেশন করেন। সাতদিন পর ড্রেসিং করে সেলাই কেটে দেওয়া হয়। রোগীকে বলা হয়, এরপরও যদি কোনো সমস্যা হয় (অনেক ক্ষেত্রে ইনফেকশন হয়) তাহলে আমাদের জানাবেন। আমরা চিকিৎসা দেব। অপারেশনে কোনো ভুল বা অবহেলা হলে সে দায় ডাক্তারের, হাসপাতালের নয় বলে দাবি করেন তিনি।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী চৌধুরী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই তবে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
আরএ