বান্দরবান: গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানি উপচে ভেসে গিয়েছিল বান্দরবানের শত শত গ্রাম। টানা বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় জনজীবনে নেমে আসে বিপর্যয়।
জানা গেছে, সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানি কমতে থাকায় নিম্নাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে শুরু করে। জেলার পৌর এলাকার আর্মিপাড়া, শেরে বাংলা নগর, ইসলামপুর, মেম্বারপাড়া, বালাঘাটা, কালাঘাটাসহ আশপাশের এলাকায় বর্তমানে বন্যা নেই। নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি কমায় বান্দরবানের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
টানা ৭৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বান্দরবানের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটেরও গতি কম।
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বন্ধ হয়ে যায় বান্দরবান শহর থেকে আশপাশের সব পাহাড়ি এলাকা। চিম্বুক সড়কের বিভিন্নস্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। ফলে রুমা ও থানচি উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেটি এখনও বিদ্যমান। বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড় ধস আর বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার পানি নামার সাথে সাথে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মারমা বাজারের সাঙ্গু নদী তীরবর্তী দুটি দ্বিতল ভবনসহ বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘর ধসে গেছে। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেস, সেনাবাহিনী ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, টানা বর্ষণে গত এক সপ্তাহে বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধস ও পানিতে ভেসে ১০ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩০। পানিবন্ধী রয়েছে ৬০০ পরিবার। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৫৭৮টি ঘর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সৌরভ দাশ শেখর এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে দুর্গতদের রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পৌর এলাকায় এবারের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এমজে