ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খাটের নিচে লুকিয়ে থেকে পরকীয়া প্রেমিককে শাবলের আঘাতে হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
খাটের নিচে লুকিয়ে থেকে পরকীয়া প্রেমিককে শাবলের আঘাতে হত্যা

কুমিল্লা: কুমিল্লার চান্দিনায় পুকুরে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

খাটের নিচে লুকিয়ে থেকে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেন স্বামী। এ হত্যাকাণ্ডে স্বামীকে সহায়তা করেন স্ত্রী।

গ্রেপ্তার দম্পতি হলেন - সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার গাবুর গাঁও গ্রামের ফাতেমা বেগম ও তার স্বামী শুক্কুর আলী। হত্যাকাণ্ডের শিকার রাজমিস্ত্রি আরিফ হোসেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার সাতগাঁও গ্রামের আলাই মিয়ার ছেলে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) মো. নাজমুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গত ৯ আগস্ট চান্দিনার করতলা গ্রামের পুকুরে ভেসে ওঠে আরিফ হোসেনের (৩০) বস্তাবন্দি অর্ধগলিত মরদেহ। এ ঘটনায় চান্দিনা থানায় নিহতের ভাই তারিছ আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১০ আগস্ট জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ওয়াহিদপুর এলাকা থেকে ফাতেমা বেগম (২৮) ও তার স্বামী শুক্কুর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ১০ বছর আগে ফাতেমা বেগম ও শুক্কুর আলীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৪টি সন্তান আছে। শুক্কুর আলী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। শুক্কুর আলীর সাথে নিহত আরিফের প্রায় ২ থেকে ৩ বছর আগে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়। বাড়িতে আসা যাওয়ার কারণে আরিফের সঙ্গে শুক্কুরের স্ত্রী ফাতেমার প্রেমের সম্পর্ক হয়। ফাতেমা একমাস আগে আরিফের সঙ্গে কুমিল্লার চান্দিনায় চলে আসে। কয়েকদিন পার হওয়ার পর ফাতেমা বুঝতে পারেন আরিফ তাকে বিয়ে করবেন না। এতে ফাতেমা ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বামী শুক্কুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। গত ৭ আগস্ট ফাতেমাকে আনতে আরিফের ভাড়াবাসায় যান শুক্কুর। ওই সময় আরিফ বাসায় ছিলেন না। এ সুযোগে ফাতেমা ও শুক্কুর আরিফকে উচিত শিক্ষা দিকে জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সেদিনই রাত ১০টায় আরিফ বাসায় এলে পরিকল্পনা মোতাবেক আরিফের বাসার খাটের নিচে লুকিয়ে থাকেন শুক্কুর । রাত ২টায় আরিফ ঘুমিয়ে পড়লে শুক্কুর ও ফাতেমা মিলে একটি লোহার শাবল দিয়ে আরিফের মাথায় সজোরে আঘাত করেন। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে আরিফের মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বিছানার চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে ভাড়া বাসার পাশের পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। স্থানীয়দের দেওয়া সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার আসামিদের কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) এনায়েত কবীর সোয়েব, চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।