ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফেরিওয়ালা বাবার এক ছেলে বিসিএস ক্যাডার, আরেক ছেলে ফুটবলার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
ফেরিওয়ালা বাবার এক ছেলে বিসিএস ক্যাডার, আরেক ছেলে ফুটবলার মিরাজুল হকের সঙ্গে বিসিএস ক্যাডার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (বামে) ও ফুটবল নিয়ে খেলছেন আলমগীর মোল্লা (ডানে)

ঝিনাইদহ: নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফেরিওয়ালা মিরাজুল হকের দুই ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে বাবা মিরাজের কষ্টের টাকায় ও নিজেদের অধ্যবসায়ে দুই ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও আলমগীর মোল্লাকে শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে হয়েছে।

তাদের বাবা মূলত ফেরি করেই সংসার চালান। সেই টাকা দিয়েই দুই ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়িয়েছেন একসঙ্গে।

ছোট থেকেই দুই ভাই খুব মেধাবী। অধ্যবসায়ের জোরে সব প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে সাফল্য অর্জন করেছেন তারা। ফেরিওয়ালা বাবা যাদের গর্ব। জেলার কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেরি করে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করেন মিরাজ হক।

ফেরিওয়ালা বাবা মিরাজের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর সদ্যঘোষিত ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার ছোট ছেলে আলমগীর ঢাবি ছাত্র ও জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়। মিরাজের স্ত্রী জুলেখা বেগম কালীগঞ্জ শহরের অগ্রণী ব্যাংকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

বড় ছেলে জাহাঙ্গীর ঢাবিতে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন ও ছোট ছেলে আলমগীর একই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র এবং জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়।

মিরাজুল হক অনেক আগে থেকেই কালীগঞ্জের মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশায় বিভিন্ন জিনিসপত্র ফেরি করে বিক্রি করেন।

মিরাজ হক বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল ছেলেরা পড়াশোনা করে চাকরি করবে, এ জন্যই তো এই শ্রম। এভাবে কষ্ট করে চলি। বৃষ্টির দিনও ব্যবসা বন্ধ রাখিনি সন্তানদের কথা চিন্তা করে। আর এই পথ পাড়ি দিতে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করতে হয়েছে।  

অভাবের সংসারে কোনোদিন কারও কাছে ছেলে-মেয়েদের জন্য হাত পাতেননি তিনি। সংগ্রাম করে ছেলেদের লেখাপড়া করিয়েছেন। হাজারো কষ্ট করেছেন, কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে অভাবের ঘানি তিনি বুঝতে দেননি।

মিরাজুল হকের স্ত্রী জুলেখা বেগম জানান, ছেলে দুটির পড়ালেখা করাতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। খেয়ে না খেয়ে জোগাতে হয়েছে তাদের পড়ালেখার খরচ। অবশেষে ছেলেদের এই সাফল্যে তিনি খুবই খুশি। সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।