ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, একটা আইনগত কাঠামোর মধ্য দিয়ে আমাদের আইনজীবী ও অভিজ্ঞ বিচারকদের সম্পৃক্ত করে মূল ঘটনা বের করে এটা লিপিবদ্ধ করা দরকার। যাতে মানুষ জানে জিয়াউর রহমান খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল।
‘কর্নেল ফারুক সানডে টাইমসে আর্টিকেল লিখেছিল। সেখানে তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার হওয়া উচিত। যাতে করে তারা সমস্ত জাতির কাছে ঘৃণিত হয়। এমনকি ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এমন বর্বরোচিত কাজ করতে না পারে’।
রোববার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ানবাজারস্থ পানি ভবনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি-জামায়াত বঙ্গবন্ধু হত্যার উপকারভোগী মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এখনো জামায়াত বলে এটা মুক্তিযুদ্ধ না গৃহযুদ্ধ। যে শিবির মানুষের পা কেটে দেয়, রগ কেটে দেয়, ধর্মকে যারা ব্যবহার করে সেই ছাত্রশিবিরের সম্মেলনে গিয়ে তারেক রহমান বলেছিল, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির একই বৃন্তের দুটি ফুল। দুই ভাই মিলে বাংলাদেশকে ধ্বংস করবে। পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানাবে বা পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ চালাবে। সেই ধারায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল।
লন্ডলভিত্তিক সানডে টাইমসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০০১-০৬ সালে তখন টাইম ম্যাগাজিনে নিউজ করেছিল বাংলাদেশ নিয়ে। এ কান্ট্রি অব ডিসগ্রিস, এ কান্ট্রি অব ডিসফাংশনাল। এ বক্তব্যের অর্থ হলো জামায়াত-বিএনপি প্রমাণ করতে চেয়েছিল অনেক আগেই বলেছিলাম এ বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকবে না। এমনকি তাদের প্রভু হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিল বাংলাদেশ ইজ এ বটমলেস বাস্কেট। কিন্তু সেই বাংলাদেশ আজ ২০২৩ সালে কোথায় পৌঁছে গেছে। যারা অতীতে বাংলাদেশকে বিরূপ মন্তব্য করেছিল তারা আজ ভুল শিকার করছে। হার্ভাড, কলম্বিয়া, অক্সফোর্ডের অর্থনীতিবিদরা বলে আমরা ভুল ছিলাম। এ বিশ্বব্যাংক ২০২১ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করেছে। তখন সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে তারা বলেছে, ‘শেখ হাসিনা ইজ জুয়েল অব ক্রাউন’।
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা প্রত্যক্ষভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচার হয়েছে। আর যারা এ হত্যাকাণ্ডের মূল কুশীলব তাদের চেহারা জাতির সামনে উন্মোচিত হওয়ার দরকার। আন্তর্জাতিক তদন্ত বা দেশীয় এটি বিষয় নয়। বরং এ ঘটনার একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন। যাতে এর নেপথ্যে যারা কাজ করেছে তাদের কী লক্ষ্য ছিল তা জাতির সামনে মুখোশ উন্মোচিত হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে বিদেশিরা বলেছে এটা আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে। এটা আন্তর্জাতিকমানের হচ্ছে না। বিএনপি-জামায়াতের লবিস্টরা এটাকে প্রশ্নবৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। তার মধ্যে ড. কামাল হোসেনের জামাইও ছিল।
বাংলাদেশকে ধর্ম রাষ্ট্র পরিণত করার চেষ্টা হয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান হ্যাঁ না ভোটের নাটক করেছিল। মোশতাক কীভাবে রাষ্ট্রপতি তা সবার জানা। তারা ক্ষমতায় এসে প্রথমে সংবিধান স্থগিত করে। তারা ধর্মনিরেপেক্ষতা তুলে দিয়ে ধর্মরাষ্ট্রে পরিণত করে দেশকে। তাদের প্রত্যেকের প্রতিটি পদক্ষেপ রাষ্ট্রদ্রোহিতা ছিল।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
এনবি/আরবি