ঢাকা: বঙ্গোপসাগরের সব পানি দিয়েও ১৫ আগস্টে হত্যাকাণ্ডের কালো দাগ মোছা যাবে না বলে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ রেলগেট এলাকায় রহমতে আলম ইসলাম মিশন ও ইসলাম মিশন এতিমখানায় শিশুদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একত্রিত করছেন, তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের মাধ্যমে যদিও আমরা স্বস্তি লাভ করেছিলাম। তবুও মনে হয়, যদি বঙ্গোপসাগরের সব পানি দিয়ে আমরা এই হত্যার কালো দাগ ধুয়ে ফেলি তবুও এ দাগ মুছতে পারব না। তাই এদেশের মানুষ ১৫ আগস্ট একত্রিত হন এ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য, হৃদয়ে ধারণ করার জন্য।
শিশুদের মধ্যে উপহার বিতরণের জন্য এ মাদরাসাকে নির্বাচিত করায় আইজিপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, রহমতে আলম ইসলাম মিশন ও ইসলাম মিশন এতিমখানার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) এখানে আসতেন এবং সবসময় মাদরাসাটির খোঁজ-খবর রাখতেন। মাদরাসাটির একটি ঐতিহ্য রয়েছে। এ মাদ্রাসার অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী আজ নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করে দিয়েছেন। তিনি সারাটি জীবন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কিভাবে পরিবর্তন হবে সেজন্য কাজ করেছেন। খুনিরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কি অপরাধ করেছিল অবুঝ শিশু শেখ রাসেল? তাকেও হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজারবাগে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তোমরা উপনিবেশিক আমলের পুলিশ নও, তোমরা স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ, জনগণের পুলিশ’।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর উপদেশ মেনে কাজ করছে পুলিশ। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে পুলিশ সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। করোনার সময় মানুষ যখন আপনজনের লাশ ফেলে চলে গেছে, তখন পুলিশ দাফনের ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ আজ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারছে।
বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কিত অধ্যায়। এ দিনটি বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাসে চরম লজ্জা ও বেদনার দিন। আমাদের সব অর্জন, গৌরব ও অহংকার ধূলিসাৎ হওয়ার দিন।
অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে হত্যা করে খুনিরা তার দৈহিক সত্ত্বা কেড়ে নিয়েছে, কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ী পিতাকে মারতে পারেনি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের অবিচ্ছিন্ন ধমনী-স্পন্দন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং অন্যান্য অতিথি ৮৫০ জন শিশুদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া, তাদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হক জিল্লু, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) খন্দকার গোলাম ফারুক, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএ
