ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভারতের আদালতে করা মামলা মিথ্যা বানোয়াট: মমতাজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৩
ভারতের আদালতে করা মামলা মিথ্যা বানোয়াট: মমতাজ

ঢাকা: ভারতের বহরমপুর আদালতের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নারী সংসদ সদস্য তথা দুই বাংলার জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে।

প্রায় ১৪ বছর আগের এ মামলায় এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হল মমতাজের বিরুদ্ধে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ‘চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’ (বহরমপুর আদালত)।

বুধবার (১৬ আগস্ট) এ বিষয়ে মমতাজ বেগম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন ‘আমার প্রিয় এলাকাবাসী ও সারা দেশে আমার গানের ভক্ত আশেকান এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষী যারা রয়েছেন, তারা কয়দিন যাবত একটা নিউজ এর পরিপেক্ষিতে খুব মন খারাপ করে আছেন এবং এটার সত্যতা কতটুকু জানতে চাচ্ছেন। আমি বিদেশ ছিলাম ১৪ আগস্ট দেশে ফিরেই ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবস নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় কাটাই বলে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। হ্যা এ কথা সত্য যে, বেশ অনেক বছর আগে ভারতে বহরমপুর কোর্টে আমার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি একটা মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করেন, যার মূল উদ্দেশ্যে ছিল আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়া আর ওই ব্যক্তি ছাড়া আমি যেন কারো মাধ্যমে ভারতে কোনো কনসার্ট করতে না পারি।

 তিনি আরও লেখেন, ‘কোনও ডকুমেন্ট ছাড়া ১৪ লাখ টাকা নেওয়ার একটি মিথ্যা মামলা উনি সাজিয়েছেন যার কোনও প্রমাণ এই ১৪/১৫ বছরে কোর্টে দাখিল করতে পারেনি। এ বছর আমি দুই বার কোর্টে হাজির হই কিন্তু দুঃখের বিষয় মামলার বাদী দুই বারই অসুস্থ বলে কোর্টে অনুপস্থিত থাকেন, তার মূল উদ্দেশ্যে হলো আমাকে হয়রানি করা। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দ্রুত এ মামলাটি যাতে শেষ হয় বিজ্ঞ আদালতকে অনুরোধ করি, কিন্তু আদালত শেষ যে তারিখটি দিয়েছিল ওই সময় আমার আগে থেকেই কানাডা একটা প্রোগ্রাম ছিল বিধায় আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে আমি আদালতকে এ বিষয় অবহিত করি এবং পরবর্তীতে একটা সময় চাইলে বিজ্ঞ আদালত সেটা গ্রহণ করে আমাকে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ পুনরায় ডেট দেন। আশা করি আমি ৮ তারিখে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত একটা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পরবর্তী কি করণীয় তা জানতে পারবো। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আপনারা সবাই আমার ওপর আল্লাহর ওয়াস্তে এ আস্থা ও বিশ্বাস রাখবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন কারো ক্ষতি না করি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ’
 
জানা গেছে, প্রায় ১৪ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজারের সঙ্গে মমতাজের লিখিত চুক্তি হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা।

তবে মমতাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থ নেওয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি। এমনকি অর্থও ফেরত দেননি তিনি। অনুষ্ঠান নিয়ে চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয়েছিল আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে। এরপরই চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর। কিন্তু থানা, প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। এরপরই বাধ্য হয়ে বহরমপুর আদালতের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর। মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেই সূত্রে ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত। পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। তার মধ্যে ওই আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন গায়িকা।  

পরে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী। ২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে মামলায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনবার আগাম জামিন পেয়ে যান গায়িকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।