ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিএটি-জেটিআই’র বিরুদ্ধে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
বিএটি-জেটিআই’র বিরুদ্ধে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

ঢাকা: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মানে না ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি (বিএটি) ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানি (জেটিআই)। আইন বহির্ভূত সকল কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি এ দুটি সিগারেট কোম্পানি।

এমনকি তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা অনেক কর্মীদেরও হুমকি দিচ্ছে কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা। এসব অভিযোগ তুলেছে তামাক বিরোধী জোটের ১১ সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ব্যানারে দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন : সিগারেট কোম্পানি বেপরোয়া শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করা হয়।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী একেএম মাকসুদ। তামাক বিরোধী জোটের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক বজলুর রহমান, দ্যা ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ডাস টিম লিডার আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা-৫ এ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু, দেশের তামাক কোম্পানিগুলো আইন ভঙ্গ করে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তামাজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ও বিক্রেতাদের উৎসাহিত করছে।

একেএম মাকসুদ বলেন, সম্প্রতি দেশের পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন, ১৬টি জেলা ও ৩২টি পৌরসভায় পরিচালিত জরিপে ২২ হাজার ৭২৩ টি বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার লঙ্ঘন চিহ্নিত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তামাকের বিজ্ঞাপন অপসারণ করেছে। আইন অনুসারে নিষিদ্ধ এ সকল বিজ্ঞাপন অপসারণকালে তামাক কোম্পানির প্রতিনিধি এবং তাদের লোকজনের মাধ্যমে নানাভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের নানাভাবে ভয়ও দেখায়।

আইন বহির্ভূত এসব কার্যক্রমের মূলে রয়েছে দুটি সিগারেট কোম্পানি- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি (বিএটি) ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানি (জেটিআই)। আইন লঙ্ঘনের পাশাপাশি তারা নানানভাবে বিদ্যমান আইনটির সংশোধনী প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছে।

আবু নাসের খান বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলোর প্যাকেটগুলোয় তামাক বিরোধী যেসব চিত্র দেওয়া সেগুলো অস্পষ্ট। বির্মুত শিল্পের মতো মনে হয়ে। বড় বড় রাষ্ট্রগুলো এই মাদক ও তামাক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রমোট করে।

এ সময় তামাক নিয়ন্ত্রণে সংবাদ সম্মেলনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী চূড়ান্ত করা; তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় এফসিটিসি’র অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুসারে কোড অব কন্ডাক্ট গ্রহণ; জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দ্রুত চূড়ান্ত এবং দেশব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ; টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ সক্রিয় করা, কমিটির ত্রৈমাসিক সভা নিয়মিতকরণ, সভার সিদ্ধান্তসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন; আইন লঙ্ঘণের দায়ে তামাক কোম্পানি/প্রতিনিধিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি জেল প্রদান; আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ; তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মনিটরিং কার্যক্রমের সাথে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করা ও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন বাস্তবায়ন করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।