ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদারীপুর ডিসি অফিসের কর্মচারীর ‘অবৈধ সম্পদে’র খোঁজে দুদক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
মাদারীপুর ডিসি অফিসের কর্মচারীর ‘অবৈধ সম্পদে’র খোঁজে দুদক

মাদারীপুর: মাদারীপুরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের কর্মচারী মিজানুর রহমান ফকিরের (৫৩) নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ফকির জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরি করছেন। তার বাড়ি মাদারীপুর পৌরসভার পাঠককান্দি এলাকায়।  

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমানের নামে ২০১৯ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তে নামেন দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক সৌরভ দাস। প্রাথমিকভাবে মিজানুর রহমান ফকিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সম্পদ বিবরণী দেওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর নোটিশ পর্যালোচনা করেন মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান।  

দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মিজানুর রহমান ফকির  দুর্নীতি দমন কমিশনে যে সম্পদ বিবরণী দিয়েছেন, তাতে নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬২ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য তিনি গোপন করেছেন। এছাড়া তিনি ৩০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারা ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  

এসব কারণে মিজানুর রহমান ফকিরের নামে ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে চলতি মাসের ৮ তারিখে মামলা দায়ের করার অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।  

মামলার বাদী আখতারুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে মিজানুর রহমান ফকিরের সম্পদ অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তিনি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব তথ্য ও প্রমাণ হাতে পেয়ে তার নামে মামলা করা হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়া হবে।

এদিকে দুদকের অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান ফকির বলেন, আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। দুদক আমাকে নোটিশ পাঠালে আমি আমার সম্পদের বিবরণী তাদের কাছে জমা দিয়েছি। তারপর কি হয়েছে বলতে পারি না।

জেলা প্রশাসকের মুখপাত্র ও মাদারীপুর স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, মিজানুর রহমান ফকিরের নামে দুদকের মামলা দায়েরের বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে দুদকের দায়ের করা মামলায় তিনি আইনগতভাবে অভিযুক্ত প্রমাণ হলে তার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির পাশাপাশি মিজান মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। মাদারীপুরে তার একাধিক ট্রাক এবং শরীয়তপুরে একাধিক গাড়ি রয়েছে। মাদারীপুর শহরেই তার চারটি বাড়ি রয়েছে। মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকায় তার একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির বড় একটি অংশ ভাড়া দেওয়া। বাড়িগুলোর মধ্যে ১৪ শতাংশ জমির ওপর বাড়িটি গড়ে তোলা হয়েছে। শহরের স্টেডিয়ামের পেছনেও বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। জমিসহ বাড়িটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। শহরের থানতলী এলাকায়ও একটি বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়িতে তার ছোট ভাই থাকেন। বাকি ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া। মাদারীপুর শহরের ইউআই স্কুল সংলগ্ন এলাকায় ১০ শতাংশ জমিতে তার একটি বাড়ি রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।