লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ঋণ পরিশোধে এনজিও চাপ সৃষ্টি করায় সানা উল্লাহ (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তার ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে।
এদিন ভোরে বাড়ির লোকজন তার মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। ঘটনার আগের রাতে দুই এনজিও কর্মী কিস্তির টাকার জন্য সানা উল্যার বাড়িতে বসে ছিলেন। টাকার আদায়ে তারা ঘরের বেড়া খুলে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।
সানাউল্যাহ উপজেলার বামনি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব সাগরদী গ্রামের কাজী বাড়ির মৃত আবদুল হক কাজীর ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। বাড়ির পাশে চা দোকান করে সংসার চালাতেন তিনি। তার দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে সানাউল্যা তার নিজ বাড়ির পুকুর পাড়ে গাব গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। পরে বাড়ির লোকজন তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
সানাউল্যার বড় ভাই আনসার উল্যা ও ছেলে হৃদয় বাংলানিউজকে জানায়, সানাউল্যাহ আশা, টিএমএস, পল্লী মঙ্গল ও রিক নামে চারটি এনজিও সংস্থা থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। অভাবের কারণে তিনি ঠিকমতো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারতেন না। প্রায় সময় এনজিওর মাঠ কর্মীরা বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য বসে থাকতেন। কোনো কোনো এনজিও কর্মী গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান নিতেন এবং অপমানজনক কথা বলতেন।
রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১২টা পর্যন্ত আশা এবং পল্লী মঙ্গলের দুই কর্মী কিস্তির টাকার জন্য বাড়িতে অবস্থান নেন। যাওয়ার সময় তারা ঘরের বেড়া খুলে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। এতে অপমান বোধ করেন সানাউল্যা। অপমান সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাদের।
স্থানীয় সংবাদকর্মী ও সানাউল্যার প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, সানাউল্যা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। এলাকার লোকজনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু ঋণের দায়ে জর্জরিত এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করবে, এটা ভাবতেই কষ্ট লাগে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
এসএম