কক্সবাজার: দৈনিক বাংলার দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন কক্সবাজারের একটি আদালত। তারা হলেন দৈনিক বাংলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু ও বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান তুহিন।
রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সদর) বিচারক কৌশিক আহাম্মদ খোন্দকার এ পরোয়ানা জারি করেন।
আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় বলে জানিয়েছে আদালতের একটি সূত্র।
দৈনিক বাংলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু বাংলানিউজকে অবশ্য জানিয়েছেন তারা এ মামলা সম্পর্কে জানেন না। কক্সবাজার আদালত থেকেও কোনো সমনও পাননি। যে কারণে তারা আদালতে হাজির হননি। এখন আদালতে হাজির হয়ে বিষয়টি আইনি পথেই মোকাবিলা করা হবে বলেও তিনি জানান।
পিন্টু বলেন, আদালতের সমন হয়তো বাদী কৌশলে গোপন করে এরকম অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটিয়েছেন। যা দুঃখজনক।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ৬ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রধান শিরোনামে ‘২৫৫ জনের তালিকায় বদির কেউ নেই’ শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদে ‘মনগড়া তথ্য’ দিয়ে ২০ জনকে টার্গেট ও বিশজনের নাম প্রকাশ করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে দৈনিক যুগান্তরের তখনকার স্টাফ রিপোর্টার ও বৈশাখী টেলিভিশন এবং দৈনিক সংবাদের সাবেক কক্সবাজার প্রতিনিধি সাংবাদিক শফিউল্লাহ শফির নামও প্রকাশ হয়।
পরে গত ১০ জানুয়ারি শফিউল্লাহ শফি বাদী হয়ে দৈনিক বাংলার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু ও বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান তুহিনের বিরুদ্ধে আদালতে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ডিবির ওসি আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়াকে মামলাটি তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ছয় মাস তদন্ত শেষে গত ১৫ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ধার্য তারিখ মতে, আদালত গত ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই আসামি যথাক্রমে আরিফুজ্জামান তুহিন ও শরিফুজ্জামান পিন্টুকে গত ২৭ আগস্টের (রোববার) মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ২৭ আগস্ট দুই আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সদর) পেশকার আমির হোসেন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি সাংবাদিক শফিউল্লাহ শফির দায়ের করা শত কোটি টাকার মানহানি মামলার দুই আসামিকে রোববার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু তারা হাজির না হওয়ায় আদালত দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। দুই আসামি হলেন আরিফুজ্জামান তুহিন ও শরিফুজ্জামান পিন্টু।
বাদীপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, বিগত ছয় মাস তদন্ত শেষ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারক দুই আসামিকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা হাজির না হওয়ার কারণে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
এসবি/এমজে