ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ডা. জাফরুল্লাহর স্বাস্থ্য ভাবনা নিয়ে আগামীতে গবেষণা-আন্দোলন হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
‘ডা. জাফরুল্লাহর স্বাস্থ্য ভাবনা নিয়ে আগামীতে গবেষণা-আন্দোলন হবে’

ঢাকা: ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী শুধু একজন ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, ওষুধ নীতি ও স্বাস্থ্যনীতির প্রণেতা নন। এই সবগুলো পরিচয় একত্র করলেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাবিশ্বের মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা ও অর্জনের জন্য যে ভূমিকা রেখেছেন তারা কিয়দাংশ হবে না।

আগামী দিনে ডা. জাফরুল্লাহর স্বাস্থ্য ভাবনা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে অজস্র গবেষণা হবে, অজস্র আন্দোলন হবে। ’

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) ‘ডা‌. জাফরুল্লাহ, জাতীয় ওষুধ নীতি ১৯৮২ ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য আন্দোলন’ শীর্ষক এক লেকচারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান এসব কথা বলেন।  

দৃকের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে এই গোলাম কাসেম ড্যাডি লেকচারের আয়োজন করা হয়।

লেকচারে অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার চিন্তার ভৈবব, জাতীয় ওষুধনীতি ১৯৮২ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ১৯৯০ প্রণয়ন- সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরির জন্য জীবনভর আন্দোলন করে গেছেন। হাজার হাজার তরুণকে তিনি অনুপ্রাণিত করেছেন। ওনার সাহস, ত্যাগ, নির্লোভ, নির্মোহ জীবন-যাপন ঢাকা শহরের শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের আকর্ষিত করতো। ওনার দূরদৃষ্টি, সাহস, প্রজ্ঞা, গরীব মানুষের জন্য ওনার নিখাদ ভালোবাসা ওনাকে সবার কাছে বাঁচিয়ে রেখেছে।

তিনি আরো বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ শিক্ষিত বুঝতে পেরেছিলেন মুনাফাকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করাই হচ্ছে মানুষকে পুঁজির দাসত্ব থেকে মুক্ত করার অন্যতম পথ। এ জন্য তিনি জাতীয় ওষুধ নীতি-১৯৮২ প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি সেই নীতিতে বেশ কয়েকটি অসাধারণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার প্রস্তাবিত জাতীয় ওষুধ নীতি- ১৯৮২ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওষুধ প্রাপ্তির নিশ্চয় ও জাতীয় ওষুধ শিল্পের বিকাশে একটি দলিল।

এ সময় তিনি ব্যক্তি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নানা দিক, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ফিল্ড হাসপাতালে অবদান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা, নারীদের ক্ষমতায়নে তার ভাবনা এবং তার সাধারণ জীবন-যাপন সম্পর্কে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ১৯৮৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দৃকের রেজিস্ট্রেশন হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি করার পেছনে আমাদের চিন্তা ও আকাঙ্ক্ষা ছিল এক ধরনের সমতা গড়ার চেষ্টা করা। সেই চিন্তা থেকে আমরা পরবর্তীতে দৃক আলোকচিত্র গ্রন্থাগার, পাঠশালাসহ বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গণ শুরু করি।

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে বড় ডাক্তারদের পাওয়া একটু কঠিন হয়, তাদের অ্যাপয়েনমেন্ট নিতে হলে লাইন ধরতে হয়, ভালো যোগাযোগ থাকতে হয়, ভিজিটও বেশ চওড়া, পেলেও বেশিক্ষণ সময় দেন না, সেখানে একজন ভিন্ন ডাক্তার হলেন ডা. জাফরুল্লাহ। তার ভিজিটের কথা তো বাদই দিলাম, তার চলাফেরা সবকিছুর মধ্যে বড় ডাক্তারের কোনো ভাব খুঁজে পাইনি। তিনি প্রতি সপ্তাহে চলে চরাঞ্চলে চলে যেতেন সেখানকার মানুষদের সেবা করার জন্য।

তিনি আরো বলেন, ডা. জাফরুল্লাহকে আমরা সব সময় আন্দোলনে দেখেছি। তিনি রাজপথে সব সময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি প্রতিবাদী ছিলেন, কোনো কিছু বলতে কখনো আপত্তি করেননি। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও তিনি অনেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পেরেছিলেন। পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গা বজায় রাখতে পেরেছিলেন। যা আজকের দিনে বিরল।

অনুষ্ঠানে মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষক ও নারী অধিকার কর্মী ফেরদৌস আজিম ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন শিরীন হক ও বারিশ হাসান চৌধুরীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।