ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গরু ব্যবসায়ীকে মারধর, ইউপি সদস্যের নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
গরু ব্যবসায়ীকে মারধর, ইউপি সদস্যের নামে মামলা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে গরু ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন ও তার ভাই আলাউদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতে সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী সুমি বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এতে উপজেলার উত্তর চর-আবাবিল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ফারুক সর্দারসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এদিকে চাঁদার জন্য আসামিরা জোরপূর্বক সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের কাছ থেকে ৪টি অলিখিত স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন। ওই স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধারের জন্য একইদিন আলাউদ্দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোহরাব সর্দার ও ফারুক সর্দারের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।  

বাদীর আইনজীবী ইউছুফ আজম সিদ্দিকী বলেন, ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন ও আলাউদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় মামলাটি আদালত আমলে নিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতের বিচারক বেলায়েত হোসেন রায়পুর থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া অলিখিত স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধারের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।  

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলার চর আবাবিল গ্রামের সাইজ উদ্দিন সর্দার, জলিল ঢালী, রব মল্লিক ও উম্মত আলী।  

এজাহার সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী সালাহ উদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের গাজীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় গরু ব্যবসায়ী। স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে তার মাংসের দোকান রয়েছে। নিজের নামে ইউপি সদস্য ফারুক 'উলফা ফারুক বাহিনী' গঠন করে হায়দরগঞ্জ বাজারে রাজত্ব করে আসছেন। গত ৩০ জুন রাতে বাড়িতে যাওয়ার পথে ফারুকের নির্দেশে আসামিরা সালাহ উদ্দিনকে ঘিরে ফেলে। এসময় ব্যবসা করতে হলে তাকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করেন। এতে রাজি না হওয়ায় ৩ জুলাই রাতে ওই আসামিরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। ভয়ে একদিন সময় চেয়ে তিনি ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। ২৭ আগস্ট সালাহ উদ্দিনের ভাই আলাউদ্দিন হায়দারগঞ্জ বাজারে যান। সেখানে আসামিরা তাকে আটক করে ফারুকের টর্চার সেলে নিয়ে যান। খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যান বাদী সুমি ও তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম। তাদের সামনেই আসামিরা আলাউদ্দিনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে ৪টি অলিখিত স্ট্যাম্পে সুমি, আলাউদ্দিনের সই ও আনোয়ারার টিপসই নেওয়া হয়।  

বাদী এজাহারে আরও জানায়, সালাহ উদ্দিনের কাছে টাকা চেয়ে ফারুক মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়। এতে ৩১ আগস্ট ঢাকা থেকে তিনি বাড়িতে এসে রাতে হায়দারগঞ্জের বাংলাবাজারে যান। সেখানে আসামিরা তাকে আটক করে ফারুকের আড্ডাখানায় নিয়ে যান৷ সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত, মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তার পকেটে থাকা দুই লাখ ছয় হাজার টাকা ফারুক নিয়ে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীর পাড় এলাকায় নিয়েও তাকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফারুক সর্দার বলেন, বাদীর অভিযোগ সত্য নয়। আমি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।  

রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শামছুল আরেফিন বলেন, আদালতের নির্দেশনার কপি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।