ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘চার লাখ টাকার পোশাক এনেছিলাম, ৪ টাকারও বেচতে পারিনি’ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
‘চার লাখ টাকার পোশাক এনেছিলাম, ৪ টাকারও বেচতে পারিনি’ 

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের কৃষি মার্কেটের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বহু ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে একজন কাপড় ব্যবসায়ী ফজলুল হক।

 

‘আমির হামজা’ ও ‘রোকেয়া বস্ত্র বিতান’ নামের দুই দোকানে ছিল তার। এ দুই দোকানে ৫০-৬০ লাখ টাকার মালামাল, আর কয়েক লাখ টাকা ছিল ক্যাশে। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।  

কপাল চাপড়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গতকালই (মঙ্গলবার) ৪ লাখ টাকার পোশাক দোকানে এনেছিলেন, আর একদিন পরেই সব পুড়ে ছাই।

নিঃস্ব এই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতি ছিল।  

ফজলুল হক বলেন, ব্যবসায়ীদের শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখানে অনেক স্বর্ণের দোকান আছে। কাপড়ের দোকান। প্রতিটি দোকানে ৩০-৪০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। কাল আমি চার লাখ টাকার মালামাল উঠেয়েছিলাম, ৪ টাকার মালও বিক্রি করতে পারিনি। কোনো কিছুই বের করতে পারি নাই। কয়েক লাখ ক্যাশ টাকাও পুড়েছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, ২৪ বছর ধরে এইখানে ব্যবসা করছি। এভাবে দোকান পুড়ে গেল, কবে ঠিক হবে, কীভাবে চলবে, আবার কবে এখানে বসতে পারব, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। এটা নিয়ে চিন্তাও করি না। হা-হুতাশ করছি না।

আগুনের সূত্রপাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি রাতে আগুন লাগার খবর জেনে দৌড়ে আসি। এসে দেখি একটা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আর ৩টা লোক। তারা দুইজন পাইপ টানছে, একজন দৌড়াদৌড়ি করেছে। তারপর আরেকটা গাড়ি আসে ৷ আমরা বার বার বলেছি মাঝ মার্কেটে পানি দেন, কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেননি। কেন যে তারা এরকম করলো জানি না। তারা যদি ঢুকতেন, আমাদের মার্কেটটা হিজিবিজি গলি না।  আমাদের মার্কেট পরিকল্পিত।  

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩ টা ৪৩ মিনিটে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এলেও মার্কেট বন্ধ থাকায় সদস্যরা ভেতরে ঢুকতে পারেনি। যে কারণে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।  পৌনে ৬ ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। তিনি জানান, ভোরে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিট ও ১৩৭ জন কর্মী। আগুন নির্বাপণে এখনো আমাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অগ্নি নির্বাপণী সাহায্যকারী দল। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার অভিযান ও সার্বিক শৃঙ্খলায় ঘটনাস্থলে কাজ করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এনএসআই, স্কাউটের ভলানটিয়ার সদস্যরা। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মার্কেটে ওপর থেকে পানি ছিটানো হয়।

এই আগুনে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। সংস্থাটি জানায়, মার্কেটটিতে ৩১৭ টি দোকান ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এমএমআই/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।