ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত হলো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত হলো

ঢাকা: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যকার চার দিনব্যাপী সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সম্মেলনটি শেষ হয়।

বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। অন্যদিকে বিএসএফ মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি শ্রী প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে সাত সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়।
 
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামের হালিশহরে বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়ন সদরদপ্তরে এই সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ভারতের উদ্দেশে প্রত্যাবর্তন করে।

সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা নিরসন, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদকপাচার, মানবপাচার রোধ, স্বর্ণ ও অস্ত্র চোরাচালান রোধসহ বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও আস্থা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিজিবি।

চার দিনব্যাপী ফলপ্রসূ আলোচনা শেষে ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে যৌথ আলোচনার দলিল সইয়ের মধ্য দিয়ে সম্মেলনটি শেষ হয়।  

এবারের সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্তের সারসংক্ষেপ-

১। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বা আহতের ঘটনা জোরালোভাবে তুলে ধরে বিজিবি। এ প্রসঙ্গে বিএসএফকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনার জন্য আহ্বান জানায় বিজিবি।

সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিএসএফের পক্ষ থেকে নন-লিথাল নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। উভয়পক্ষ সীমান্তে পেশাদারত্বের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথটহল বাড়ানো, সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি নেওয়া, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক তথ্য দেওয়া-নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়।

২। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদকপাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানবপাচার, স্বর্ণ, অস্ত্র, জাল মুদ্রার নোট প্রভৃতি চোরাচালান রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর উভয় পক্ষ থেকে গুরুত্বারোপ করা হয়। সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া-নেওয়া এবং তাদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ে শেয়ার করতেও উভয়পক্ষ সম্মত হয়।

৩। আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে উভয় দেশের নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে উভয়পক্ষ গুরুত্বারোপ করে।  

৪। উভয়পক্ষ পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আস্থা বাড়াতে নেওয়া নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে একমত হয়। উভয়পক্ষ আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সম্মত হয়।

৫। উভয়পক্ষ পূর্বানুমতি ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি জানায়। এ ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজসমূহ জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের বিষয়ে তারা সম্মত হয়।  

৬। উভয়পক্ষ পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন সুবিধাজনক সময়ে ভারতে অনুষ্ঠানের বিষয়ে একমত পোষণ করে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
পিএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।