ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাগেরহাটে দুদকের গণশুনানি, ২০ দপ্তরের বিরুদ্ধে ৭১ অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
বাগেরহাটে দুদকের গণশুনানি, ২০ দপ্তরের বিরুদ্ধে ৭১ অভিযোগ

বাগেরহাট:  বাগেরহাটে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী শহরের জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

 

শুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন- দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেনের সঞ্চালনায় গণশুনানিতে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদ, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মো. শাহরিয়ার জামিল, পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) বাগেরহাটের সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দুদকের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে অংশ নিয়ে মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালিত আউট অফ স্কুল চিলড্রেন কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী এনজিও সুখী মানুষের বিরুদ্ধে উপকরণ সহায়তা প্রদান না করা, কর্মীদের বেতন না দেওয়া এবং জামানতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক হিরামন কুমার বিশ্বাসকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিটন প্রেসক্লাবের অনুকূলে দুই লাখ টাকার অনুদান দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী ঝুমুর বালা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটার আশ্বাস দেন।

বিআরটিএ-তে চার বছর ঘুরেও ড্রাইভিং লাইসেন্স না পেয়ে অভিযোগ করেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, জেলার বাইরে চাকরি করি। বিআরটিএতে চার বছর ঘুরেও, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাইনি। অস্থায়ী রোড পার্মিট নিয়ে আমার চলতে হয়। অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক লায়লাতুল মাওয়া বলেন, সার্ভার পরিবর্তনের কারণে কিছু ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে সমস্যা হচ্ছে। অভিযোগকারীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স পাওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে হোল্ডিংয়ে নাম পরিবর্তনের জন্য ১০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে বলে বাগেরহাট পৌরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক নারী। টাকা না দেওয়াতে তাঁর হোল্ডিং পরিবর্তন হচ্ছে না। অভিযোগের জবাব দেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী ও বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান।  শুনানিতে প্রায় সব দপ্তর প্রধানদের উপস্থিত থাকতে হয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘আমাদের পৌরসভা মিউটেশন করা লাগে, এর জন্য পৌরসভা রেজুলেশন করে একটি ফি নির্ধারণ করেছে, এটা হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন সেলিম সাহেব তিনি আছে। তার দাবি ওই টাকা চাওয়া হয়নি।

এছাড়া, শুনানিতে বাগেরহাট সদর উপজেলা এসিল্যান্ড, সাবরেজিস্ট্রার, ভূমি অধিগ্রহণে জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারী, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাগেরহাট, সমাজসেবা অধিদপ্তর, পাসপোর্ট অফিস, বাগেরহাট জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালসহ ২০টি দপ্তরের বিরুদ্ধে ৭১টি অভিযোগ দেন সেবা প্রার্থীরা। এর মধ্যে অধিকাংশ অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়। কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। জনসাধারণের আনা অভিযোগ সমাধান হলো কিনা তা সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে দুদকে জানাতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এদিন কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সাধারণ মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। দুর্নীতি প্রতিরোধের আকাঙ্ক্ষা প্রত্যেক নাগরিককে মনেপ্রাণে ধারণ করতে হবে। শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি কমানো সম্ভব না। কমিশনের কাজ হচ্ছে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।