ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রূপপুরের জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকবেন শেখ হাসিনা-পুতিন

শামীম খান, স্পেশালর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
রূপপুরের জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকবেন শেখ হাসিনা-পুতিন

ঢাকা: নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর হতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে রূপপুর প্রকল্পে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থাকবেন।

এর আগে, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি দেশে এসে পৌঁছাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রূপপুর প্রকল্প এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম সংশ্লিষ্টরা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) প্রথম ইউনিটের প্রথম ব্যাচের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম রাশিয়া থেকে আনার সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই জ্বালানি দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।  

এরপর আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ জ্বালানি হস্তান্তর করবেন। এ সময় রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেবেন।  

জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর আগামী ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরার কথা কথা রয়েছে। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে থাকার কথা রয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালকেরও। তবে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারলে তিনিও ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন।

জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, জ্বালানি আসার মধ্য দিয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা আসতে পারব। এটি একটি মাইলফলক হবে। আইএইএর গাইডলাইন মেনে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হতে পারেন, আশা করছি। এ বিষয়ে যোগাযোগ চলছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন অনুষ্ঠানে।    

রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন- রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে।

রাশিয়ার ওই কারখানা থেকে বিশেষ বিমানে জ্বালানি ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আসবে। এরপর তা সড়কপথে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রকল্প সাইটে নেওয়া হবে। এ ইউরেনিয়াম সড়কপথে পরিবহনের সময় ভিভিআইপি সমমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করা হবে। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।  

কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জ্বালানি পরিবহনের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। ইউরেনিয়াম আমদানি, পরিবহন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার বিষয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। সেই গাইডলাইন বা নির্দেশনা পুরোপুরি অনুসরণ করেই সব ধরনের ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে আরও জানা যায়, রূপপুরে প্রথম ব্যাচের এ জ্বালানি সাত ধাপে দেশে আনা হবে। প্রথম ব্যাচে যে পরিমাণ জ্বালানি আসবে, তা দিয়ে এক বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যত দিন চালু থাকবে ততদিন রাশিয়ার কোম্পানিটি এ প্রকল্পের জ্বালানি সরবরাহ করে যাবে। এ সংক্রান্ত আলাদা চুক্তি রয়েছে কোম্পানিটির সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী তারা নিয়মিতভাবে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করবে। তা ছাড়া পারমাণবিক জ্বালানির বর্জ্যও নিয়ে যাবে রাশিয়া, সে চুক্তিও করা হয়েছে দেশটির সঙ্গে।  

রাশিয়ার প্রযুক্তি, আর্থিক সহায়তা এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি ইউনিট রয়েছে এবং দুটি ইউনিটেই স্থাপন করা হয়েছে রাশিয়ার সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি থ্রি জি+ ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর। দুই ইউনিটি বিশিষ্ট এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এই প্রকল্প আগামী বছর চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
এসকে/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।