ঢাকা: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত হবিগঞ্জের মাধবপুর ছাতিয়াইন দক্ষিণ রামেশ্বর গ্রামে বিশ্বকর্মা পূজায় দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর, ফরিদপুরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর, বাগেরহাটের চিতলমারীতে কৃষ্ণপদ হীরা হত্যা, দিনাজপুরে অমল মোহন্তসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, হত্যা ও লুটপাটের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের নেতারা এই দাবি করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, বাঙ্গালীর চিরন্তন ঐতিহ্যও বটে। প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য পড়াশুনা, চাকরি বা ব্যবসার প্রয়োজনে অন্যত্র বসবাস করে। সেজন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা পরিবার পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য সারাবছর এই দিনগুলির অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও সরকারিভাবে মাত্র একদিনের ছুটি থাকে, সেটাও বিজয়া দশমীর দিন। ফলে দুর্গাপূজায় কারও পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পরিবার পরিজনের সাঙ্গে ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার করার সুযোগ থাকে না।
তারা বলেন, বিজয়া দশমীতে পিতা-মাতা, প্রতিবেশী ও গুরুজন ব্যক্তিদের প্রণাম করা ও আশীর্বাদ নেওয়া একটি ধর্মীয় সামাজিক রীতি। এর মধ্য দিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি হয়। কিন্তু এক দিন ছুটি থাকায় কারও পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পিতা-মাতা বা গুরুজনদের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ থাকে না। ফলে পূজার দিনগুলো পিতা-মাতা, সন্তান, স্বামী, স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মানুষিক কষ্টের মধ্যেই দিন কাটাতে বাধ্য হয়। গত ২০ বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায় মানববন্ধন, স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে।
তারা আরও বলেন, সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার বিধান রয়েছে। তারপরও দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘ দিনের দুর্গা পূজায় তিনদিনের ছুটির দাবিটি উপেক্ষিত। আমরা আশা করি আসন্ন দুর্গা পূজার আগেই হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘ দিনের দাবিটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করা হবে।
এ সময় তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলা, হত্যা, ভাংচুর, মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরকারীদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুণ্ডু তপুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রনি রাজবংশী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মালাকার, গোপাল কুণ্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় পাল আদর, দপ্তর সম্পাদক উৎপল ভৌমিক, পল্লব দাস, হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল প্রমূখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
এসসি/এসআইএ