বরগুনা: তালতলী উপজেলায় সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি চুরির ঘটনায় কবিরাজ (ফকির) থেকে ‘বাঁশ পড়া’ এনে এক কিশোররে শরীরে চালান দেওয়া ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাঁশ চালানের ঘটনায় রবিউল নামে ওই কিশোর ‘চোর সাব্যস্ত’ হয়েছিল বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, রবিউলকে চোর সাব্যস্ত করে বাঁশ চালান দেওয়ার ঘটনাটি ভিডিও করেন চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর। তিনিই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ভিডিও ভাইরাল হলে চুরির অপবাদ ও ঘৃণায় রবিউল আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কামাল তালুকদার নামে চরপাড়ার এক স্থানীয়ের ঘর থেকে সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি চুরি হয়। ঘটনার ব্যাপারে থানায় না জানিয়ে তিনি কুসংস্কারের সহায়তা নিয়ে চোর শনাক্তের জন্য কথিত ফকির আমতলীর হোসনে আরা বেগমের কাছ থেকে বাঁশ পড়া আনেন। এরপর তুলা রাশির এক লোক এনে গ্রামবাসীর সামনে বাঁশ চালান দেওয়া হয়। পরে চোর সাব্যস্ত হন রবিউল।
এ ঘটনার ভিডিও করেন হাফিজুর। তিনি ভিডিও প্রকাশ করলে রবিউল বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবার বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ধরে ফেলে।
ভুক্তভোগী রবিউল জানায়, সে জেলের কাজ করে। বাঁশ চালানের কথা শুনে সেটি দেখতে তিনি ঘটনাস্থলে যায়। দর্শক হিসেবে গিয়ে সে চোর সাব্যস্ত হয়। কিন্তু সে এসবের কিছুই জানতো না। চুরির অপবাদ নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়নি বলেই সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এ বিষয় কামাল তালুকদার বলেন, আমার ব্যাটারি চুরি হয়েছে। এ জন্য আমি বাঁশ পড়া এনে তা চালান দেই। তাতে রবিউল চোর শনাক্ত হয়। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করিনি আমি।
এ ঘটনার ভিডিও ছাড়িয়ে দেওয়া হাফিজুর বলেন, বাঁশ চালানের ভিডিও অনেকেই করেছেন, ছেড়েছেন। তাই আমিও ছেড়েছি।
ফকির হোসনে আরা বলেন, আমি বাঁশ পড়া দিতে চাইনি। জোর করে নিয়েছে।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, এ বিষয় আমাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। আর এসব বাঁশ চালানের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। রবিউলের পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
এসএম/এমজে