ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সবাই এগিয়ে এলে দুর্যোগে ক্ষতি কমানো সম্ভব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
সবাই এগিয়ে এলে দুর্যোগে ক্ষতি কমানো সম্ভব

ঢাকা: দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, তবে সবাই এগিয়ে এলে প্রাণহানি বা ক্ষতি প্রশমিত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণে কর্মকাঠামো এবং প্রাইভেট সেক্টর ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মপরিধি শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না, তবে প্রাণহানি প্রতিরোধ বা ক্ষতি প্রশমিত করা সম্ভব। যেকোনো দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, যেকোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যদি ফাস্ট রেসপন্ডার দ্রুত সাড়া দেন তাহলে আগুনে ক্ষতি কম হয় বা প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, ভূমিধস বা ভূমিকম্পের মতো যেকোনো দুর্যোগে সরকারের পক্ষ থেকে হয়তো রিলিফ দিচ্ছি কিন্তু ক্ষতিটা সবার, ব্যবসায়ীর তো বটেই। সেজন্য সবাই যদি সচেতন হয়, তবেই সার্থকতা।

মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস আসবে, এটা অনুমিত। দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে প্রকৃতি অনেক বদলেছে, সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। এবার কক্সবাজারে বন্যার আগে কৃষকরা মোনাজাত করেছে, কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। অথচ এক মাস পর বন্যা হয়ে গেল।  

দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার সমালোচনা না করে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নকাজ চলবে। দুর্যোগে উন্নয়নকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলে সমালোচনা বা থেমে থাকলে হবে না। আর সব সরকার করে দেবে না। ব্যবসায় লাভবান হবেন, কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখবেন না তা হবে না। নিজে সচেতন হই, দুর্যোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম কিনে ঘরে রাখি।

আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে ও সরকারের সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জন করেছে।  

কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একটু সচেতন হলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেত উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নগদ টাকা, ভাউচার রেখে গেছেন। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোটিপতি আজ ফকির হয়েছেন। অথচ একটু সচেতনতাই আমাদের নিরাপদ করতে পারতো।

দুর্যোগ সচেতনতায় ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা প্রাইভেট সেক্টরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবার আগে অল্প খরচ আর সচেতনতায় যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।

এ সময় অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভিত্তিক মডেলটি ইনস্টল ও ব্যবহার করতে সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আগুন বা ধোয়া শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক মেসেজ দেওয়ার প্রজেক্ট নিয়েছি। দুবছর ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ করার প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছি।

অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএম) নিতাই চন্দ্র দে সরকার বলেন, ১০৯০ নম্বটিকে আমরা প্রমোট করছি। আগে টোল ছিল, সেটা ফ্রি করা হয়েছে। যে কেউ এখন খুব সহজেই এ নম্বর ডায়াল করে দুর্যোগ ও আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারছে।

কর্মশালায় জানানো হয়, ব্যবসায়িক ও শহুরে সম্প্রদায়ের মধ্যে দুর্যোগে সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ইউরোপীয় সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনসের (ইকো) অর্থায়নে স্ট্রেন্দেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্পটি একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প।  

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।