ঢাকা: বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের এক দীর্ঘ প্রেক্ষাপট রয়েছে। কিন্তু এই চুক্তি বাস্তবায়নে প্রথম বাধা আসে বিএনপির আমলে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন কর্তৃক আয়োজিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,বর্তমানে সমতলের আদিবাসীদরা নিদারুন অবস্থা পার করছে। উত্তরাঞ্চলে তাদের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। এটাকে একটা ভুলে যাওয়া অধ্যায় হিসেবে দেখা হলে তা সমীচীন নয়। পার্বত্য অঞ্চল দেশের এক দশমাংশ ধারণ করে। কিন্তু সেখানে সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। সুতরাং দেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্যই উচিত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করা।
রাশেদ খান মেনন বলেন, শান্তিচুক্তির একটা বড় বিষয় হলো বেসামরিকীকরণ। কিন্তু অস্থিতিশীলতার কথা বলে সেখানে আরো সামরিকীকরণ করা সমীচিন নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারে বিষয়টি নিয়ে আসা উচিত। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদ ইতিমধ্যে সংখ্যালঘু আইন তাদের ইশতেহারে যুক্ত করেছে। এখন সরকার যদি আইন করেও না পারে,তাহলে অর্ডিন্যান্স জারি করার মাধ্যমেও এটা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেসবাহ কামাল বলেন, বাংলাদেশ যে বহু জাতির দেশ, বহু সংস্কৃতির দেশ এটা অন্তত ফুটে উঠছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউ ৪১টি ভাষার খোঁজ পেয়েছে। যেখানে এত ভাষা আছে, এত বৈচিত্র্য আছে সেটাকে আমরা এক জাতির রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছি। এটা চরম স্বৈরাচারিতা, অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিক।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আবারো ১৯৯৭ আগের পরিস্থিতির দিকে এগুচ্ছে ধারণা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সমাধানের পথ ছিল এই চুক্তি। সেই সময় সরকার একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে এই চুক্তি করেছিল। কিন্তু পঁচিশ বছরেরও এ চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি।
মতবিনিময় সভায় সংগঠনের পক্ষে চুক্তি বাস্তবায়নে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীতা তুলে ধরা হয় সেগুলো হলো-
• সকল বাম-প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক দলসমূহকে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আদিবাসী সম্পর্কিত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
• প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ২০২৪ সনের সাধারণ নির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহারে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের উত্থাপিত ৫ দফা দাবিসহ সমতলের আদিবাসীদের দাবিগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
• রাজনৈতিক দল ও সহযোগী সংগঠন সমূহে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আদিবাসী জনণের বিষয়ে একজন মুখপাত্র ও সাংগঠনিকভাবে সম্পাদকীয় পদ তৈরি করতে হবে।
• জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় সরকার পরিষদসমূহে সকলরে আদিবাসী মনোনয়ন প্রদান করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
এমকে/এমএম