ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘খেয়ে-পরে বাঁচতেই ২৫ হাজার টাকা মজুরি চাই’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
‘খেয়ে-পরে বাঁচতেই ২৫ হাজার টাকা মজুরি চাই’

ঢাকা: মজুরি বোর্ডের তৃতীয় সভা উপলক্ষে ১১ সংগঠনের জোট ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’ মজুরি বোর্ডের সামনে ২৫ হাজার টাকা মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।

‘মালিকের স্বার্থে ইচ্ছেমতো মজুরি নয়, ৪০ লাখ শ্রমিকের খেয়ে-পরে বাঁচতে ২৫ হাজার টাকা মজুরি চাই’ স্লোগানে ৬৫ শতাংশ বেসিক, ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার (১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে মজুরি বোর্ডের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা।

জোটের সমন্বয়ক এবং গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে এবং জোটের সদস্য সচিব ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শামীম ইমাম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, ওএসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা প্রদীপ রায় প্রমুখ।

মজুরি বোর্ডে শ্রমিকদের মজুরির কোনো প্রস্তাবনা পেশ না করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী মজুরি বোর্ডের ৬ মাস মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৯ অক্টোবর। অথচ আজ তৃতীয় সভায়ও মজুরি বিষয়ক কোনো প্রস্তাবনা না করে শ্রমিকদের প্রতি মালিকপক্ষ ও বোর্ড চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। বর্তমান বাজারে শ্রমিকদের যেখানে বেঁচে থাকা দায় সেখানে এই বিলম্ব শ্রমিককে আরও বেশি বিপদে নিক্ষেপ করবে। শ্রমিকের জীবনে দুর্দশা দূর করার বিষয়ে মালিকপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আজ কোনো প্রস্তাবনা ছাড়াই বোর্ড মিটিং সেটাই প্রমাণ করে। শ্রমিকদের জীবনের মূল্যের চেয়ে মালিকরা কেবল তাদের পুঁজি ও মুনাফা বৃদ্ধিতে ব্যস্ত বলে নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তারা আরও বলেন, ৪০ লাখ শ্রমিক আজ মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবনা পাবার আশায় ছিল। লাখো শ্রমিককে নিরাশ করেছে বোর্ড। গত বৈঠকে মালিকও শ্রমিক প্রতিনিধি উভয়ই তৃতীয় বৈঠকে মজুরি প্রস্তাবের আশ্বাস দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আজ তারা কথা রাখেনি। দীর্ঘসূত্রিতার মাঝে শ্রমিকদের নতুন বেতন যত দেরি করে দেওয়া যায়, যত বঞ্চিত করা যায় সেটাই মালিকদের লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।

পোশাকশ্রমিক নেতারা বলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবি করে আসছে শ্রমিকরা। কিন্তু ৯ এপ্রিল মজুরি বোর্ড গঠিত হলেও বোর্ড কোনো কার্যকর ভূমিকা এখন পর্যন্ত নেয়নি। অতীতের মতো তারা শ্রমিকদের নতুন মজুরি নির্বাচন কেন্দ্রিক জটিল অবস্থায় ঠেলে দিয়ে সুবিধা পেতে চেষ্টা করছে। গত ২০১৮ সালেও মজুরি ঘোষণা করতে দেরি হওয়ায় তা ২০১৯-এ গিয়ে কার্যকর হয়। ২০১৮ এর  ঘটনার পুনরাবৃত্তি শ্রমিকরা কখনো গ্রহণ করবে না।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মালিকপক্ষের সুবিধা বা ইচ্ছামতো কোনো মজুরি প্রস্তাবনা সামনে হাজির হলে তা শ্রমিকরা কখনো মেনে নেবে না। কারণ কোনো মতে খেয়ে পরে বাঁচতে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরি প্রয়োজন। তাই কেবল মালিকের স্বার্থ বিবেচনায় ইচ্ছেমতো মজুরি প্রস্তাব বা বিলম্ব না করার আহ্বান জানান তারা। বরং শ্রমিকের জীবনমান বদলে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবি বিবেচনায় নেওয়ার আহবান জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।