ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সালিসে তর্কের জেরেই রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৩
সালিসে তর্কের জেরেই রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা স্বভাবকবি খ্যাত রাধাপদ রায়। ছবি: সংগ্রহীত

ঢাকা: সম্প্রতি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ‘স্বভাবকবি’–খ্যাত রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পাশের এলাকার দুই ভাই মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলীর বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ ওঠে।

পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে, ছয় মাস আগে অনানুষ্ঠানিক এক সালিসে বাগবিতণ্ডার জের ধরেই রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহত রাধাপদ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
 
গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার গোদ্দারেরপাড় এলাকায় নিজ বাড়িতে রাধাপদ রায় হামলার শিকার হন। এ সময় কবিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় কবি রাধাপদ সরকারের ছেলে জুগল রায় গত রোববার (১ অক্টোবর) রাতে অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেন। তবে ঘটনার তিন দিন পরও অভিযুক্ত দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।  

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন থেকে তারা দুই ভাই পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কবিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।

রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় সাংবাদিকদের বলেন, তার বড় ভাই মাধব রায় ও নাগেশ্বরী পৌরসভার হাসেমবাজার এলাকার মিলন ঢাকায় একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে মিলন এলাকায় এসে দাবি করেন, তিনি মাধব রায়ের কাছে কাজের টাকা পাবেন। এ নিয়ে তিনি ছয় মাস আগে এলাকায় সালিস ডাকেন। সেখানে একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করা স্থানীয় শ্রমিকেরা উপস্থিত হন। ওই অনানুষ্ঠানিক সালিসে হিসাবের খাতায় দেখা যায়, মিলন ৫০০ টাকা পাবেন। পরে সালিস বৈঠকের মাধ্যমেই তা ফেরত দেন রাধাপদ রায়।

তিনি বলেন, ওই সালিসে একই উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার কদুর রহমান এসে উপস্থিত হন। তিনি এলাকায় গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামোর নির্মাণকাজ চলাকালে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন রাধাপদ রায়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সে সময় কদুর রহমানের সঙ্গে রাধাপদের বাগবিতণ্ডা হয়, যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরে কদুর রহমানের ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম এ ঘটনার প্রতিশোধ নেবেন বলে হুমকি দেন।

ওই সালিসে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা লিটন রায় (২৯)। তিনিও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি বলেন, টাকা পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে রাজমিস্ত্রিদের ফোরম্যানসহ তারা ১০–১২ জন বসেছিলেন। সেখানে কদুর রহমান টাকা মেরে খাওয়া নিয়ে ভর্ৎসনা করতে থাকেন। কবির স্ত্রীকে নোংরা ভাষায় গালি দেন। এতে কবি ক্ষিপ্ত হলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শনিবার সকালে কদুর আলীর ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম কবিকে একা পেয়ে তার ওপর বাঁশের লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালান এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে চলে যান।

কবি রাধাপদ রায় সাংবাদিকদের বলেন, রফিকুলের সঙ্গে তার আগের কোনো শত্রুতা ছিল না। রফিকুলের ভাই কদুর আলীর সঙ্গে ছয় মাস আগে একবার কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কদুর আলী তার ভাই রফিকুলকে দিয়ে হামলা চালান। অথচ ছয় মাস আগের ওই ঘটনা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।