ঢাকা: দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদস্য দেশগুলোর (এসএটিআরসি) মতামতের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিটিআরসি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানসহ দক্ষিণ এশিয়ার নয়টি দেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটরস, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ ১শ প্রতিনিধি অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসএটিআরসি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞান বিনিময়, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, টেলিযোগাযোগ খাতের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ ও টেকসই ডিজিটাল অবকাঠামো বাস্তবায়ন, টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন, টেলিযোগাযোগ খাতে পলিসিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে টেকসই ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পর স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের সুবিধা নেওয়ার জন্য তরুণদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রান্তিক এলাকায় দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি নিশ্চিতে কার্যক্রম নিয়েছে।
সম্মেলনে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের বিকাশমান রূপান্তরে ক্ষেত্রে এসএটিআরসির এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
স্মার্ট বাংলাদেশের অর্জনে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তির বিস্তারের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি হবে।
স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, সদস্য দেশগুলো পারস্পরিক ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার তথা স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি বাস্তবায়নে সদস্য দেশগুলোকে সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির মহাসচিব মাসানোরি কোন্ডো বলেন, দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সদস্য দেশগুলোর টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
সৃজনশীল এবং বৈশ্বিক কানেক্টিভিটি প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে সদস্যগুলোকে সম্মিলিতভাবে কার্যক্রম নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি অব ইরানের পরিচালক আলী রেজা দরবিশি বলেন, পরিবর্তিত প্রযুক্তির যুগে ডিজিটাল রুপান্তর একটি বাস্তবতা এবং টেকসই ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গঠনের অন্যতম হাতিয়ার। অর্থনৈতিক প্রণোদনার পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে জনকল্যাণমূলক আইসিটি রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক নির্ধারণে পলিসি গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এসএটিআরসি প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, স্টান্ডার্ডাইজেশন, রেগুলেটরি প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ খাত উন্নয়নের কৌশল এবং টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি সম্পর্কে কর্মকৌশল নির্ধারণ করে থাকে।
সদস্য দেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবছর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৩
এমআইএইচ/এএটি