ঢাকা, রবিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ঋণ নয়, ক্ষতিপূরণ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ঋণ নয়, ক্ষতিপূরণ দাবি ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ঋণ না দিয়ে দায়ী ধনী দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ (ইক্যুইটিবিডি), গ্লোবাল ল থিঙ্কার্স সোসাইটি (জিএলটিএস), নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ), উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস ও ওয়াটার কিপার।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর তথাকথিত সব জলবায়ু ঋণ বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো জলবায়ু অর্থায়নের নামে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ঋণগ্রস্ত করে ফেলছে। জলবায়ু বিপর্যয়ের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কোনোভাবেই ঋণ নয়।

ইক্যুইটিবিডির আমিনুল হক বলেন, ১৯৮০-এর দশকে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্ট্রাকচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ সরিয়ে নিয়েছে ধনী দেশগুলো। এখন তারা ‘জলবায়ু বিপর্যয়’ নামে একটি নতুন বৈশ্বিক সমস্যাকে সামনে নিয়ে এসে ‘জলবায়ু অর্থায়ন’ নামে স্বল্পোন্নত ও জলবায়ু বিপদাপন্ন দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে।

প্যারিস চুক্তিকে অন্যায্য একটি চুক্তি অভিহিত করে তিনি বলেন, বর্তমান অর্থায়ন প্রক্রিয়া আসলেই অন্যায্য। সুতরাং জলবায়ু বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দরিদ্র দেশগুলোকে দেওয়া জলবায়ু অর্থায়ন ধনী দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে। পাশাপাশি এসব অর্থায়ন হতে হবে শর্তহীন।

ওয়াটার কিপার্সের শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ঋণনির্ভর নীতি সহায়তা গ্রহণ করায় বাংলাদেশসহ অনেক স্বল্পোন্নত দেশ ইতোমধ্যে ঋণের ফাঁদে আটকে গেছে। জাইকা চালিত ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান-২০৩০ একটি ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা এবং এটি বাংলাদেশের জন্য পরনির্ভরতা তৈরি করবে। সরকারকে এ ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে।

উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, দরিদ্র দেশগুলো ঋণ পরিশোধের জন্য ইতোমধ্যে কৃষিসহ দরিদ্রবান্ধব সরকারি সেবাখাতে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে, ফলে বাড়ছে দরিদ্রতা। ঋণ নির্ভর দুষ্টচক্র জলবায়ু বিপর্যয়কে আরও তীব্রতর করে তুলছে এবং জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় সক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলছে। এ কারণেই জলবায়ু ঋণ বাতিলের কোনো বিকল্প নেই।

কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দরিদ্রবিরোধী ভূমিকা হতাশাজনক। এখন তারা আবার তথাকথিত নীতি সমর্থন নিয়ে হাজির হয়েছে, যা অতিবিপদাপন্ন দেশগুলোর জন্য ঋণের বোঝা তৈরি করছে। বিদ্যমান বৈশ্বিক আর্থিক প্রক্রিয়াকে সম্পদ পাচার উপযোগী একটি শোষণমূলক প্রক্রিয়া।

এ সময় তিনি জাতিসংঘের আওতায় একটি অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক ও টেকসই অর্থ ব্যবস্থার সুপারিশ করেন।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের মোস্তফা কামাল আকন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।