ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা সেতুর ট্রেনে ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত আসছে

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
পদ্মা সেতুর ট্রেনে ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত আসছে

ঢাকা: পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেলপথ ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এ রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে।

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। এ রেলপথের জন্য ভাড়া নির্ধারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে।

প্রথম প্রস্তাবনায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।

প্রথম প্রস্তাবনায় ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে মেইল ট্রেনে ১২০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১৪৫ টাকা, আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৩৫০ টাকা, এসি চেয়ার ৬৬৭ টাকা, এসি সিট ৮০৫ টাকা ও এসি বার্থ ১২০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সংশোধিত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেইল ট্রেনে ৮০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১০০ টাকা, শোভন চেয়ার ২৩০ টাকা, এসি চেয়ার ৪৪৩ টাকা, এসি সিট ৫২৯ টাকা ও এসি বার্থ ৭৯৪ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিএম) নাজমুল ইসলামকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়।

রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, ট্রেনের ভাড়া বাড়ার পেছনে প্রধান দুটি বিষয় উঠে এসেছে। একটি পদ্মা সেতু অপরটি গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথ।

এই পথের জন্য অতিরিক্ত পথ যোগ করে ভাড়া বেশি ধরা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুকে ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়ালপথকে ১১৫ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালসেতুর জন্যে দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৩ কিলোমিটার।

বর্তমানে দেশে লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তনগর— এই চার ধরনের ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ট্রেনের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩৯ পয়সা আর আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া নন-এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর কিলোমিটার প্রতি এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও বাণিজ্যিক শাখার পরিচালক নাহিদ হাসান খান বলেন, ভাড়া কমানোর বিষয়ে কমিটি কাজ করছে।

ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বাংলানিউজকে বলেন, রেলে ডিসকাউন্ট রাখার নিয়ম রয়েছে। যাত্রী চাহিদার উপরে ভিত্তি করে ঠিক করা হবে।

অন্যদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বাসের চেয়ে যেন ট্রেনের ভাড়া বেশি না হয়, সে চিন্তাও আমাদের রয়েছে।

পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে যে চার ট্রেন
প্রাথমিকভাবে শুরুতে পদ্মা সেতু দিয়ে চারটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই চার ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা/সুন্দরবনের যেকোনো একটি, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু ঢাকায় চলাচল করবে।  

রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেন মধুমতি এক্সপ্রেসকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা-পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা রুটে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হচ্ছে।  

এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা-মাওয়া ৪০ কি.মি. ও  মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করা হবে। এদিকে প্রকল্পের তৃতীয় অংশ ভাঙ্গা-যশোর ৮৭ কি.মি. রেললাইন নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ ভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
এনবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।