নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলওয়ে সেতু কারখানাটি আবারও সচল করা হয়েছে। এখানে নির্মাণ করা হচ্ছে ক্রাইস্ট চার্চ ক্রিব (সিসি ক্লিব) নামে এক ধরনের উপকরণ।
গত ৬ মাসে ২০২টি সিসি ক্লিব নির্মাণ হয়েছে ওই সেতু কারখানায়। এর ফলে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং সেই সঙ্গে অর্থ সাশ্রয় হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রেলওয়ে সেতু কারখানায় মাত্র ১০ জন শ্রমিক সিসি ক্লিব তৈরিতে ব্যস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত রেলসেতু সচল রাখতে বিকল্প উপকরণ হচ্ছে ওই সিসি ক্লিব। ৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এসব সিসি ক্লিব অত্যন্ত শক্তিশালী উপাদান। এর ওপর দিয়ে ভারী ট্রেন চলাচল করতে পারে। শ্রমিকরা পরিশ্রম করে গত ৬ মাসে ২০২টি সিসি ক্লিব তৈরি করেছেন। এর কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছেন কারখানার সহকারী সেতু প্রকৌশলী (এবিই)।
এসব উপকরণ দিয়ে ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেলসেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সিসি ক্লিব ব্যবহার করা হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানার সহকারী সেতু প্রকৌশলী (এবিই) তহিদুল ইসলাম বলেন, এই কারখানায় ১০৪ জন জনবলের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪ জন শ্রমিক-কর্মচারী। এর মধ্যে ১০ জন নিয়োজিত আছেন রেলসেতুর টেম্পরি অ্যারেঞ্জমেন্ট বা বিকল্প ব্যবস্থার সিসি ক্লিব তৈরির কাজে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম উপকরণ ও লোকবল পেলে সেতু কারখানাটি পুরোপুরি সচল করা সম্ভব। আমরা এখান থেকেই পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল রেলের কয়েক হাজার রেলসেতু মেরামতে ভূমিকা রাখতে পারবো।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৬৫ সালে ১৮ একর জমির ওপরে কারখানাটি গড়ে উঠে। আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের সবগুলো রেলসেতু রক্ষণাবেক্ষণ হতো এই সেতু কারখানা থেকে। বাজেট ঘাটতি, জনবল সংকট ও সমস্যার কারণে এই কারখানাটি ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় সচল হওয়ার পর গত ৬ মাসে এখানে ২০২টি সিসি ক্লিব নির্মাণ করা হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুল হক জানান, রেল সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন নতুন লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার রেল বান্ধব। এ কারণে রেলসেতু মেরামত ও সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই এই কারখানাটি চালু করে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। এতে করে বিদেশ নির্ভরতা কমবে ও অর্থ সাশ্রয় হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
এফআর