ঢাকা, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাগুরায় ১১ বছর ধরে নারীরাই দুর্গাপূজার আয়োজক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৩
মাগুরায় ১১ বছর ধরে নারীরাই দুর্গাপূজার আয়োজক ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: ঢাকি, পূজারি, বাজার করা, নিমন্ত্রণ দেওয়া, প্রসাদ বিতরণ, প্রতিমা বিসর্জনসহ পূজার সব কাজই করেন নারীরা। মাগুরা সদর উপজেলার আঠারোখাদা ইউনিয়নের বাঁশকোঠা গ্রামে ১১ জন নারী ১১ বছর ধরে শারদীয় দুর্গাপূজার এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করে আসছেন।

তবে বাঁশকোঠা গ্রামে তিনটি দুর্গাপূজা হলেও এ পূজাটি অন্যগুলোর থেকে ব্যতিক্রম। সেখানে সারা বছর নারীরা বিভিন্নভাবে একটু একটু করে অর্থ জমিয়ে পূজার কাজে ব্যয় করেন। তবে এ বছর সব জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

বাঁশকোঠা গ্রামের পূজা কমিটির সভাপতি অঞ্জলি টিকাদার বলেন, আমাদের কমিটিতে বর্তমানে ১২ জন সদস্য রয়েছেন। প্রথম বছর যখন পূজা শুরু করি তখন পূজা শেষে আমাদের ২২ হাজার টাকা বেঁচে যায়। তা দিয়ে কালি মন্দিরের পাশে নতুন একটি শিব মন্দির তৈরি করেছি। তাছাড়া মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর এই মন্দিরের উন্নয়নের এক লাখ টাকা দিয়েছেন।

কমিটির আরেক সদস্য অনামিকা বিশ্বাস বলেন, এ বছর সরকারিভাবে আমরা ৫০০ কেজি চাল পেয়েছি। আমাদের এলাকার নারীরা আমাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় এবার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাঁদার পরিমাণ অনেক কম। মনে হচ্ছে এ পূজা উঠাতে কষ্ট হয়ে যাবে।

পূজার নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য আব্দুল রশিদ বলেন, আমরা সাধারণত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ডিউটিতে গিয়ে থাকি। এ বছর বাঁশকোঠা গ্রামের একটি পূজার ডিউটিতে এসেছি। যেখানে নারীরা সব ধরনের দায়িত্ব পালন করে।

মাগুরা জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহন লাল রায় খোকন ঠাকুর বলেন, সব স্থানেই আমরা দেখি পুরুষরা পূজা-পার্বনের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু বাঁশকোঠা গ্রামে ১১ বছর ধরে একটি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেটির আয়োজক নারীরা। জেলায় এই দুর্গাপূজাটি ব্যতিক্রম। যেখানে নারীরা পূজার সব দায়িত্ব পালন করে। আমি মনে করি, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া দুর্গাপূজা ২৪ অক্টোবর বিজয় দশমী ও সিঁদুর উৎসবের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে।

মাগুরা জেলা প্রশাসক আবু নাসের বেগ বলেন, নারীরা শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করেছেন, এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। সব স্থানে নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পূজাকে সার্থক করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জেলায় এ বছর ৭০৩টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার নিরাপত্তায় আনসার ও পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।