ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অশুভের বিনাশ ও শান্তির প্রার্থনায় দেবীকে বিসর্জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
অশুভের বিনাশ ও শান্তির প্রার্থনায় দেবীকে বিসর্জন ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: অশুভ শক্তির বিনাশ ও বিশ্ব সংসারের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ‘অন্নদাত্রী’কে বিদায় জানালেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

বেলতলায় দেবীর নিদ্রাভঙ্গের বন্দনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল, বিজয়া দশমীতে তার সাঙ্গ হল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে।

দেবীকে আবার মর্ত্যে আমন্ত্রণ জানাতে অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ এক বছর।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর সকালে বিহিত পূজা সম্পন্ন করে ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলি ও শান্তির জল ছিঁটানোর পর দর্পণ-বিসর্জনের আয়োজন সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপের প্রতিমাগুলো ট্রাকে কিংবা ভ্যানে করে প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য নেওয়া হয় বুড়িগঙ্গার তীরে ওয়াইজ ঘাটে কেন্দ্রীয় প্রতিমা বিসর্জনস্থলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজঘাট এলাকার বীণাস্মৃতি স্মানঘাটে ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আসা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। এসময় মন্ত্র পাঠ করছিলেন ভক্তরা। ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা সেখানে পৌঁছাতে রায়সাহেব বাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন লেগে যায়।

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ জানান, পূজা কমিটির সহায়তায় একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। বাইরে থেকে যারা প্রতিমা নিয়ে আসছে, স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের বিসর্জনের কাজে সহায়তা করছেন।

এছাড়া বিভিন্ন ঘাটে রাত ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ২৪৬টি মণ্ডপের প্রতিমা একে একে বিসর্জন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, বিসর্জন ঘিরে আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়।

পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ২৪৫টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, নবমীর পূজা সম্পন্নের পর মর্ত্য ছেড়ে নিজালয়ে যাত্রা করেন দেবী দুর্গা। বিজয়া দশমীতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় ত্রিনয়নীর পূজা।

শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের দেবী। একইসঙ্গে তিনি ‘মাতৃরূপেণ’, ‘শক্তিরূপেণ’। ১৪ অক্টোবর মহালয়ার দিন সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের, আগামী ২৮ অক্টোবর কোজাগিরী পূর্ণিমার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দেবী পক্ষ।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মহালয়ার দিনে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা সন্তানদের নিয়ে কৈলাশের স্বামীর ঘর থেকে মর্ত্যে যাত্রা শুরু করেন। আর বিজয়া দশমীতে ফিরে যান।  

শাস্ত্রীয় মতে, এবার দেবী দুর্গা কৈলাশ থেকে সপরিবারে মর্ত্যলোকে এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে। আবার ফিরেও যাচ্ছেন ঘোড়ায়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
এইচএমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।