ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কমলগঞ্জে ৫২ প্রধান শিক্ষক ও ৩৬ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৩
কমলগঞ্জে ৫২ প্রধান শিক্ষক ও ৩৬ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫২টিতে প্রধান শিক্ষক ও ৩৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান (সহকারী শিক্ষক) শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্যতায় বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অবিভাবকশূন্য হয়ে আছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।  

শিক্ষক শূন্য এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদগুলো দ্রুত পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক, অভিভাবক এবং সচেতন মহল।  

এছাড়া, নানা সংকটের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দৈন্যদশা চলছে। এ কারণে অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব শূন্যপদ পূরণ করা হবে বলে জানান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলায় নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ১৫২জন প্রধান শিক্ষক এবং ৭৭৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৫২টি বিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (সহকারী শিক্ষক) দিয়ে।  

এ ছাড়াও উপজেলার মোট ১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। ১৫২টি বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা রয়েছে ২২ হাজার ৩৩৬জন। তার মধ্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) রয়েছে ৫১ জন। এ উপজেলায় বেসরকারিভাবে ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সেগুলোতে রয়েছে ৯ হাজার ৬৮৭ জন ছাত্র-ছাত্রী। এর মধ্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) রয়েছে ১১ জন। এসব বিদ্যালয় আবার চলছে কেজি, এনজিও ও চা বাগান পরিচালিত।

কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক পপি আক্তার ডলি জানান, উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষাদান ও সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে প্রধান শিক্ষকবিহীন এসব বিদ্যালয়ে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। আর তা না হলে দিন দিন উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হবে। প্রধান শিক্ষক শূন্যতার কারণে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান ধরে রাখা সম্ভব হয় না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পাঠদানের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ, শ্রেণিকক্ষ পর্যবেক্ষণ, সভা-সেমিনারে অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, যখন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন শিক্ষক সংকট রেখেই কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেয়। আবার দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের কাঁধেই ভারপ্রাপ্তের ভার পড়ছে। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। অন্যদিকে অফিসের বিভিন্ন নিদের্শনা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয়। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

শ্রীসূর্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভীন জাহান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিদ্যালয় ও অফিসের কাজের পাশাপাশি স্কুলে ক্লাসও নিতে হচ্ছে। শিক্ষার গুণগতমান অক্ষুণ্ন রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৩
বিবিবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।