শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে কৃত্তিনাশা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সালমা বেগম নামে এক গৃহবধূ।
রোববার (৫ নভেম্বর) বিকেলে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই শিশু সন্তান আনিকা (৩) ও সোলেমানকে (১) জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন সালমা বেগম ও সাত বছরের ছেলে সন্তান সাহাবীর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে নড়িয়ার ভোজেস্বর ইউনিয়নের পাঁচক এলাকার লোকমান ছৈয়ালের মেয়ে সালমা বেগমের সঙ্গে জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার শাজাহান মাদবরের ছেলে আজবাহার মাদবরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সালমা বেগমের শাশুড়ি মিলি বেগম ও ননদ কলির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। এই নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। শনিবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হলে রোববার সকালে তিন সন্তান সাহাবীর, আনিকা ও সোলেমানকে নিয়ে কীর্তিনাশা নদীতে ঝাঁপ দেন সালমা। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে নদী থেকে আনিকা ও সোলেমানকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে নিখোঁজ সালমা বেগম ও ছেলে সাহাবীকে উদ্ধার করতে কাজ শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
নিখোঁজ সালমা বেগমের মামা লিটন ছৈয়াল অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগনিকে বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন অত্যাচার করতেন। শনিবার (৪ নভেম্বর) রাতে তারা আমার ভাগনিকে মারধর করেন। এই ক্ষোভে তিন সন্তানসহ নদীতে ঝাঁপ দেন সালমা।
তবে সালমা বেগমের স্বামী আজবাহার মাদবর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার স্ত্রীর সঙ্গে কারো ঝামেলা ছিল না। কেন ও আমার বাচ্চাদের নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে তাও জানি না। কয়েকদিন ধরে ওর মাথায় সমস্যা হচ্ছিল তাই ভেবেছিলাম ফকির দেখাব।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সালমা নামের এক গৃহবধূ পারিবারিক কলহের কারণে তিন শিশু সন্তানসহ নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। দুই শিশুকে স্থানীয়রা উদ্ধার করতে পারলেও মা ও আরেক সন্তান নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৩
এসএম