নারায়ণগঞ্জ: জেলার রূপগঞ্জে মহাসড়কে অবরোধ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার সঙ্গে জড়িত ঘটনায় ককটেল, পেট্রলবোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ জেলা ছাত্রদলের ৪ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল।
গ্রেপ্তাররা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ বিল্লাহ ও দাউদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা তৌহিদ হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নিদের্শনায় গ্রেপ্তাররা ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানাধীন মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা করে আসছিল। ৬ নভেম্বর ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম রূপগঞ্জ থানাধীন দাউদপুর ইউনিয়নের কাজিরবাগ এলাকার জনৈক সাইফুল ইসলামের দোতলা বাড়ি থেকে ১২টি ককটেল, ১০টি পেট্রলবোমা, একটি বিদেশি পিস্তল ও ম্যাগজিনসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানায় বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও অবরোধে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনায় ও ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করে। তাদের মোবাইলফোনের সংরক্ষিত মেসেজ, কথোপকথন, ছবি ও ভিডিও পর্যালোচনা করে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের অন্যান্য সহযোগী ও হুকুমদাতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, গত ২৮ তারিখ বিএনপির সমাবেশ হয়েছিল পল্টন এলাকায়। সেদিন কাকরাইলসহ আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানে আমাদের একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন সারা দেশে হরতাল দিয়ে যে নৈরাজ্য, তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরবর্তী তিন দিনের অবরোধে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে গাড়ি পোড়ানো ও সহিংসতার ঘটনা দেখেছি। রূপগঞ্জে একটি কভার্ডভ্যানে আগুনসহ যে ভাঙচুর ও নৈরাজ্য পাশাপাশি আড়াইহাজারের পাচরুখী এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়েছি এসকল ঘটনায় সরাসরি কারা জড়িত। অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ ও মাসুদুর রহমান মাসুদ, আরিফ ও তৌহিদকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র আমরা পেয়েছি।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা যে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে এর সঙ্গে বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ সরাসরি সম্পৃক্ত। জেলা বিএনপির প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও এর সঙ্গে জড়িত। মোবাইলে আমরা তাদের যোগাযোগ পেয়েছি। সেখানে মেসেজ অপশনে দেখেছি ২৮ তারিখের পরবর্তী গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় নির্দেশনা পেয়েছি।
তিনি বলেন, ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে এই যে আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে আমাদের এ এলাকায়ও তারা এগুলো করেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা ব্যাপক ভাবে এগুলো করার মহাপরিকল্পনা নিয়েছিল। আমরা মনে করি এটা আমরা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২৩
এমআরপি/এসএএইচ